নারীর উক্তি
      মিছে তর্ক— থাক্‌ তবে থাক্‌।
                   কেন কাঁদি বুঝিতে পার না?
        তর্কেতে বুঝিবে তা কি?          এই মুছিলাম আঁখি—
              এ শুধু চোখের জল, এ নহে ভর্ৎসনা।

 

              আমি কি চেয়েছি পায়ে ধরে
                   ওই তব আঁখি-তুলে চাওয়া—
        ওই কথা, ওই হাসি,           ওই কাছে আসা-আসি,
              অলক দুলায়ে দিয়ে হেসে চলে যাওয়া?

 

              কেন আন বসন্তনিশীথে
                   আঁখিভরা আবেশ বিহ্বল—
        যদি বসন্তের শেষে                 শ্রান্তমনে ম্লান হেসে
              কাতরে খুঁজিতে হয় বিদায়ের ছল?

 

              আছি যেন সোনার খাঁচায়
                   একখানি পোষ-মানা প্রাণ।
        এও কি বুঝাতে হয়                প্রেম যদি নাহি রয়
              হাসিয়ে সোহাগ করা শুধু অপমান?

 

              মনে আছে সেই এক দিন
                   প্রথম প্রণয় সে তখন।
        বিমল শরতকাল,                     শুভ্র ক্ষীণ মেঘজাল,
              মৃদু শীতবায়ে স্নিগ্ধ রবির কিরণ।

 

              কাননে ফুটিত শেফালিকা,
                   ফুলে ছেয়ে যেত তরুমূল।
        পরিপূর্ণ সুরধুনী,                  কুলুকুলু ধ্বনি শুনি,
              পরপারে বনশ্রেণী কুয়াশা-আকুল।