মানসী

আমা-পানে চাহিয়ে তোমার
                   আঁখিতে কাঁপিত প্রাণখানি।
        আনন্দে বিষাদে মেশা              সেই নয়নের নেশা
              তুমি তো জান না তাহা, আমি তাহা জানি।

 

              সে কি মনে পড়িবে তোমার—
                   সহস্র লোকের মাঝখানে
        যেমনি দেখিতে মোরে           কোন্‌ আকর্ষণডোরে
              আপনি আসিতে কাছে জ্ঞানে কি অজ্ঞানে।

 

              ক্ষণিক বিরহ-অবসানে
                   নিবিড় মিলন-ব্যাকুলতা।
        মাঝে মাঝে সব ফেলি           রহিতে নয়ন মেলি,
              আঁখিতে শুনিতে যেন হৃদয়ের কথা।

 

              কোনো কথা না রহিলে তবু
                   শুধাইতে নিকটে আসিয়া।
        নীরবে চরণ ফেলে             চুপিচুপি কাছে এলে
              কেমনে জানিতে পেতে, ফিরিতে হাসিয়া।

 

              আজ তুমি দেখেও দেখ না,
                   সব কথা শুনিতে না পাও।
        কাছে আস আশা ক’রে        আছি সারাদিন ধ’রে,
              আনমনে পাশ দিয়ে তুমি চলে যাও।

 

              দীপ জ্বেলে দীর্ঘ ছায়া লয়ে
                   বসে আছি সন্ধ্যায় ক’জনা—
        হয়তো বা কাছে এস,           হয়তো বা দূরে বস,
              সে সকলই ইচ্ছাহীন দৈবের ঘটনা।

 

              এখন হয়েছে বহু কাজ,
                   সতত রয়েছ অন্যমনে।
        সর্বত্র ছিলাম আমি—              এখন এসেছি নামি
                 হৃদয়ের প্রান্তদেশে, ক্ষুদ্র গৃহকোণে!