বিরহানন্দ
এই ছন্দে যে যে স্থানে ফাঁক সেইখানে দীর্ঘ যতিপতন আবশ্যক

  ছিলাম নিশিদিন    আশাহীন    প্রবাসী
  বিরহতপোবনে    আনমনে    উদাসী।
  আঁধারে আলো মিশে    দিশে দিশে    খেলিত;
  অটবী বায়ুবশে    উঠিত সে    উছাসি।
  কখনো ফুল দুটো    আঁখিপুট    মেলিত,
  কখনো পাতা ঝরে    পড়িত রে    নিশাসি।

 

  তবু সে ছিনু ভালো   আধা-আলো-    আঁধারে,
  গহন শত-ফের    বিষাদের    মাঝারে।
  নয়নে কত ছায়া    কত মায়া    ভাসিত,
  উদাস বায়ু সে তো    ডেকে যেত    আমারে।
   ভাবনা কত সাজে    হৃদিমাঝে    আসিত,
   খেলাত অবিরত    কত শত    আকারে!

 

   বিরহপরিপূত    ছায়াযুত    শয়নে,
   ঘুমের সাথে স্মৃতি    আসে নিতি    নয়নে।
   কপোত দুটি ডাকে    বসি শাখে    মধুরে,
   দিবস চলে যায়    গলে যায়    গগনে।
   কোকিল কুহুতানে    ডেকে আনে    বধূরে,
   নিবিড় শীতলতা    তরুলতা    গহনে।

 

   আকাশে চাহিতাম    গাহিতাম    একাকী,
   মনের যত কথা    ছিল সেথা    লেখা কি?
   দিবসনিশি ধ’রে    ধ্যান ক’রে    তাহারে
   নীলিমা-পরপার    পাব তার    দেখা কি?
   তটিনী অনুখন    ছোটে কোন্‌    পাথারে,
   আমি যে গান গাই   তারি ঠাঁই    শেখা কি?