মানসী
   বিরহে তারি নাম    শুনিতাম    পবনে,
   তাহারি সাথে থাকা    মেঘে ঢাকা    ভবনে।
   পাতার মরমর    কলেবর    হরষে;
   তাহারি পদধ্বনি    যেন গনি    কাননে!
   মুকূল সুকুমার    যেন তার    পরশে,
   চাঁদের চোখে ক্ষুধা    তারি সুধা    -স্বপনে।

 

   করুণা অনুখন    প্রাণ মন    ভরিত,
   ঝরিলে ফুলদল    চোখে জল    ঝরিত।
   পবন হুহু ক’রে    করিত রে    হাহাকার,
   ধরার তরে যেন    মোর প্রাণ    ঝুরিত।
   হেরিলে দুখে শোকে    কারো চোখে    আঁখিধার
   তোমারি আঁখি কেন    মনে যেন    পড়িত।

 

   শিশুরে কোলে নিয়ে    জুড়াইয়ে    যেত বুক,
   আকাশে বিকশিত    তোরি মতো    স্নেহমুখ।
   দেখিলে আঁখি-রাঙা    পাখা-ভাঙা    পাখিটি
   “আহাহা” ধ্বনি তোর    প্রাণে মোর    দিত দুখ।
   মুছালে দুখনীর    দুখিনীর    আঁখিটি,
   জাগিত মনে ত্বরা    দয়া-ভরা    তোর সুখ।

 

   সারাটা দিনমান    রচি গান    কত-না!
   তোমারি পাশে রহি    যেন কহি    বেদনা।
   কানন মরমরে    কত স্বরে    কহিত,
   ধ্বনিত যেন দিশে  তোমারি সে    রচনা।
   সতত দূরে কাছে   আগে পাছে    বহিত
   তোমারি যত কথা    পাতা-লতা    ঝরনা।

 

   তোমারে আঁকিতাম,    রাখিতাম    ধরিয়া
   বিরহ ছায়াতল    সুশীতল    করিয়া।
   কখনো দেখি যেন    ম্লান-হেন    মুখানি,
   কখনো আঁখিপুটে    হাসি উঠে    ভরিয়া।
   কখনো সারা রাত    ধরি হাত    দুখানি