অরূপরতন

বিজয়। পাওয়ার চেয়ে না পাওয়াতেই হয়তো শুভ, কে বলতে পারে?

বিক্রম। এ কী উদাসীনের মতো কথা বলছ।

বসুসেন। এ কী! ভূমিকম্প না কি!

বিক্রম। ভূমিই কাঁপছে বটে, কিন্তু তাই বলে পা কাঁপতে দেওয়া হবে না।

বসুসেন। এটা দুর্লক্ষণ।

বিক্রম। কোনো লক্ষণই দুর্লক্ষণ নয়, যদি সঙ্গে ভয় না থাকে।

বসুসেন। দৃষ্ট কিছুকে ভয় করি নে কিন্তু অদৃষ্ট পুরুষের সঙ্গে লড়াই চলে না।

বিক্রম। অদৃষ্ট দৃষ্ট হয়েই আছেন, তখন তাঁর সঙ্গে খুবই লড়াই চলে।


দূতের প্রবেশ

দূত। মহারাজ, সৈন্যরা প্রায় সকলে পালিয়েছে।

বিক্রম। কেন?

দূত। তাদের মধ্যে অকারণে কেমন একটা আতঙ্ক ঢুকে গেল — কাউকে আর ঠেকিয়ে রাখা যাচ্ছে না।

বিক্রম। আচ্ছা, তাদের ফিরিয়ে আনছি। যুদ্ধের পর হারা চলে কিন্তু যুদ্ধের আগে হার মানতে পারব না।

[বিক্রমবাহু ও দূতের প্রস্থান

বিজয়। যার জন্য যুদ্ধ সেও পালায়, যাদের নিয়ে যুদ্ধ তারাও পালায়, এখন আমাদেরই কি পালানো দোষের।

বসুসেন। মনে ধাঁধাঁ লেগেছে, কিছু স্থির করতে পারছি নে।

[উভয়ের প্রস্থান
সুরঙ্গমার প্রবেশ
গান
      বসন্ত, তোর শেষ করে দে রঙ্গ,
ফুল ফোটাবার খ্যাপামি, তার
           উদ্দাম তরঙ্গ॥
      উড়িয়ে দেবার, ছড়িয়ে দেবার
      মাতন তোমার থামুক এবার,
      নীড়ে ফিরে আসুক তোমার
           পথহারা বিহঙ্গ॥
      সাধের মুকুল কতই পড়ল ঝরে
      তারা ধুলা হল, ধুলা দিল ভরে।
      প্রখর তাপে জরো-জরো
      ফল ফলাবার শাসন ধরো,
      হেলাফেলার পালা তোমার
           এই বেলা হোক ভঙ্গ॥