বিহারীলাল

উথলে লাবণ্যরাশি,
তরল দর্পণে যেন দিগন্তে আবরে;
আচম্বিতে অপরূপ
রূপসীর প্রতিরূপ
হাসি হাসি ভাসি ভাসি উদয় অম্বরে।’

এই সারদা দেবীর Spirit of Beauty-র নব-অভ্যুদিত করুণা-বালিকামূর্তি এবং সর্বত্রব্যাপ্ত সুন্দরী ষোড়শীমূর্তির বর্ণনা সমাপ্ত করিয়া কবি গাহিয়া উঠিয়াছেন–

‘তোমারে হৃদয়ে রাখি
সদানন্দ মনে থাকি,
শ্মশান অমরাবতী দু’ই ভালো লাগে।–
গিরিমালা, কুঞ্জবন,
গৃহ, নাট-নিকেতন,
যখন যেখানে যাই, যাও আগে আগে। ...
যত মনে অভিলাষ
তত তুমি ভালোবাসো,
তত মনপ্রাণ ভরে আমি ভালোবাসি।
ভক্তিভরে একতানে
মজেছি তোমার ধ্যানে,
কমলার ধনে মানে নহি অভিলাষী।’

এই মানসীরূপিণী সাধনার ধনকে পরিপূর্ণরূপে লাভ করিবার জন্য কাতরতা প্রকাশ করিয়া কবি প্রথম সর্গ সমাপ্ত করিয়াছেন।

তাহার পর-সর্গ হইতে প্রেমিকের ব্যাকুলতা। কখনো অভিমান কখনো বিরহ, কখনো আনন্দ কখনো বেদনা, কখনো ভর্ৎসনা কখনো স্তব। দেবী কবির প্রণয়িনী রূপে উদিত হইয়া বিচিত্র সুখদুঃখে শতধারে সংগীত উচ্ছ্বসিত করিয়া তুলিতেছেন। কবি কখনো তাঁহাকে পাইতেছেন কখনো তাঁহাকে হারাইতেছেন–কখনো তাঁহার অভয়রূপ কখনো তাঁহার সংহারমূর্তি দেখিতেছেন। কখনো তিনি অভিমানিনী, কখনো বিষাদিনী, কখনো আনন্দময়ী।

কবি বিষাদিনীকে বলিতেছেন–

‘অয়ি, এ কী, কেন কেন,
বিষণ্ন হইলে হেন–
আনত আনন-শশী, আনত নয়ন,
অধরে মন্থরে আসি
কপোলে মিলায় হাসি
থরথর ওষ্ঠাধর, স্ফোরে না বচন!
তেমন অরুণ-রেখা