প্রজাপতির নির্বন্ধ

রসিক। একেবারে দারোগার হাতে চোর দুটিকে সমর্পণ করে দেওয়া হোক।

চন্দ্রবাবুর প্রবেশ

চন্দ্র। এই-যে আপনারা এসেছেন। পূর্ণবাবুকেও দেখছি।

অক্ষয়। আজ্ঞে না, আমি পূর্ণ নই, তবু অক্ষয় বটে।

চন্দ্র। অক্ষয়বাবু! তা, বেশ হয়েছে, আপনাকেও দরকার ছিল।

অক্ষয়। আমার মতো অদরকারি লোককে যে দরকারে লাগাবেন তাতেই লাগতে পারি– বলুন কী করতে হবে।

চন্দ্র। আমি ভেবে দেখেছি, আমাদের সভা থেকে কুমারব্রতের নিয়ম না ওঠালে সভাকে অত্যন্ত সংকীর্ণ করে রাখা হচ্ছে। শ্রীশবাবু বিপিনবাবুকে এই কথাটা একটু ভালো করে বোঝাতে হবে।

অক্ষয়। ভারি কঠিন কাজ, আমার দ্বারা হবে কি না সন্দেহ।

চন্দ্র। একবার একটা মতকে ভালো বলে গ্রহণ করেছি বলেই সেটাকে পরিত্যাগ করবার ক্ষমতা দূর করা উচিত নয়। মতের চেয়ে বিবেচনাশক্তি বড়ো। শ্রীশবাবু, বিপিনবাবু–

শ্রীশ। আমাদের অধিক বলা বাহুল্য–

চন্দ্র। কেন বাহুল্য? আপনারা যুক্তিতেও কর্ণপাত করবেন না?

বিপিন। আমরা আপনারই মতে–

চন্দ্র। আমার মত এক সময় ভ্রান্ত ছিল সে কথা স্বীকার করছি, আপনারা এখনো সেই মতেই–

রসিক। এই-যে পূর্ণবাবু আসছেন। আসুন আসুন।

পূর্ণর প্রবেশ

চন্দ্র। পূর্ণবাবু, তোমার প্রস্তাবমতে আমাদের সভা থেকে কুমারব্রত তুলে দেবার জন্যেই আজ আমরা এখানে মিলিত হয়েছি। কিন্তু শ্রীশবাবু এবং বিপিনবাবু অত্যন্ত দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, এখন ওঁদের বোঝাতে পারলেই–

রসিক। ওঁদের বোঝাতে আমি ত্রুটি করি নি চন্দ্রবাবু–

চন্দ্র। আপনার মতো বাগ্মী যদি ফল না পেয়ে থাকেন তা হলে–

রসিক। ফল যা পেয়েছি তা ফলেন পরিচীয়তে।

চন্দ্র। কী বলছেন ভালো বুঝতে পারছি নে।

অক্ষয়। ওহে রসিকদা, চন্দ্রবাবুকে খুব স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেওয়া দরকার। আমি দুটি প্রত্যক্ষ প্রমাণ এখনই এনে উপস্থিত করছি।

[প্রস্থান]

শ্রীশ। পূর্ণবাবু, ভালো আছেন তো?

পূর্ণ। হাঁ।

বিপিন। আপনাকে একটু শুক্‌‍নো দেখাচ্ছে।

পূর্ণ। না, কিছু না।