বাঁশরি
বসি,যা তা বকে যাই। পরশুদিন সকালে এসেছিলুম ওর ঘরে। পায়ের শব্দ পায় নি। ওর সামনে এক বাণ্ডিল চিঠি। ডেস্কে ঝুঁকে পড়ছিল বসে, বেশ বুঝতে পারলুম চোখ দিয়ে জল পড়ছে। যদি জানত আমি দেখতে পেয়েছি তা হলে একটা কাণ্ড বাধত, বোধ হয় আমার সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যেত। আস্তে আস্তে চলে গেলুম। কিন্তু, সেই ছবি আমি ভুলতে পারি নে। বাঁশি গেল কোথায়।
খানসামা চায়ের সরঞ্জাম রেখে গেল

সতীশ। বাঁশি এইমাত্র বেরিয়ে গেছে, ভাগ্যিস গেছে।

শৈল। ভারি স্বার্থপর তুমি।

সতীশ। অত্যন্ত। ও কী, উঠছ কেন। চা তৈরি শুরু করো।

শৈল। খেয়ে এসেছি।

সতীশ। তা হোক-না, আমি তো খাই নি। বসে খাওয়াও আমাকে। কবিরাজী মতে একলা চা খাওয়া নিষেধ, ওতে বায়ু প্রকুপিত হয়ে ওঠে।

শৈল। মিথ্যে আবদার কর কেন।

সতীশ। সুযোগ পেলেই করি, তোমার মতো খাঁটি সত্য আমার ধাতে নেই। ঢালো চা, ও কী করলে, চায়ে আমি চিনি দিই নে তুমি জান।

শৈল। ভুলে গিয়েছিলুম।

সতীশ। আমি হলে কখনো ভুলতুম না।

শৈল। আমাকে স্বপ্ন দেখে অবধি তোমার মেজাজের তো কোনো উন্নতি হয় নি। ঝগড়া করছ কেন।

সতীশ। কারণ মিষ্টি কথা পাড়লে তুমিই ঝগড়া বাধাতে। সীরিয়স হয়ে উঠতে।

শৈল। আচ্ছা থামো, তোমার চা খাওয়া হল?

সতীশ। হলেই যদি ওঠ তা হলে হয় নি।

ভৃত্যের প্রবেশ

ভৃত্য। হরিশবাবু দলিলপত্র নিয়ে এসেছেন।

সতীশ। বলো ফুর‌্সত নেই।

[ ভৃত্যের প্রস্থান

শৈল। ও কী ও, কাজ কামাই করবে!

সতীশ। করব, আমার খুশি।

শৈল। আমি যে দায়ী হব।

সতীশ। তাতে সন্দেহ নেই, বিনা কারণে কেউ কাজ কামাই করে না।

নেপথ্য থেকে। সতীশদা!

সতীশ। ঐ রে! এল ওরা! বাড়িতে নেই বলবার সময় দিলে না।