মালিনী
নিরাপদে হৃদয়ের মাঝে করে বাস
রাজ্ঞীসম মনোহর মহাসর্বনাশ।
চারুদত্ত।   চলো সবে রাজদ্বারে, বলো, ‘রক্ষ রক্ষ
মহারাজ, আর্যধর্মে করিতেছে লক্ষ্য
তব নীড় হতে সর্প।’
সুপ্রিয়।                      ধর্ম? মহাশয়,
মূঢ়ে উপদেশ দেহো ধর্ম কারে কয়।
ধর্ম নির্দোষীর নির্বাসন?
চারুদত্ত।                        তুমি দেখি
কুলশত্রু বিভীষণ। সকল কাজে কি
বাধা দিতে আছে?
সোমাচার্য।                      মোরা ব্রাহ্মণসমাজে
একত্রে মিলেছি সবে ধর্মরক্ষাকাজে,
তুমি কোথা হতে এসে মাঝে দিলে দেখা
অতিশয় সুনিপুণ বিচ্ছেদের রেখা—
সূক্ষ্ম সর্বনাশ।
সুপ্রিয়।                     ধর্মাধর্ম সত্যাসত্য
কে করে বিচার? আপন বিশ্বাসে মত্ত
করিয়াছ স্থির, শুধু দল বেঁধে সবে
সত্যের মীমাংসা হবে, শুধু উচ্চরবে?
যুক্তি কিছু নহে?
চারুদত্ত।                     দম্ভ তব অতিশয়
হে সুপ্রিয়।
সুপ্রিয়।               প্রিয়ম্বদ, মোর দম্ভ নয়,
আমি অজ্ঞ অতি— দম্ভ তারি যে আজিকে
শতার্থক শাস্ত্র হতে দুটো কথা শিখে
নিষ্পাপ নিরপরাধ রাজকুমারীরে
টানিয়া আনিতে চাহে ঘরের বাহিরে
ভিক্ষুকের পথে— তাঁর শাস্ত্রে মোর শাস্ত্রে
দু-অক্ষর প্রভেদ বলিয়া।
ক্ষেমংকর।                         বচনাস্ত্রে
কে পারে তোমারে বন্ধুবর।