মালিনী
পদ্মদলে। নেত্র মুদি শুনিতেছি কানে
আকাশের কোলাহল; কাহারা কে জানে
কী করিছে আয়োজন আমারে ঘিরিয়া,
আসিতেছে যাইতেছে ফিরিয়া ফিরিয়া
অদৃশ্যমুরতি। কভু বিদ্যুতের মতো
চমকিছে আলো ; বায়ুর তরঙ্গ যত
শব্দ করি করিছে আঘাত। ব্যথাসম
কী যেন বাজিছে আজি অন্তরেতে মম
বারম্বার— কিছু আমি নারি বুঝিবারে
জগতে কাহারা আজি ডাকিছে আমারে।


রাজমহিষীর প্রবেশ
মহিষী।    মা গো মা, কী করি তোরে লয়ে। ওরে বাছা,
এ-সব কি সাজে তোরে কভু, এই কাঁচা
নবীন বয়সে? কোথা গেল বেশভূষা
কোথা আভরণ? আমার সোনার উষা
স্বর্ণপ্রভাহীনা, এও কি চোখের ’পরে
সহ্য হয় মার?
মালিনী।               কখনো রাজার ঘরে
জন্মে না কি ভিখারিনী? দরিদ্রের কূলে
তুই যে, মা জন্মেছিস সে কি গেলি ভুলে
রাজেশ্বরী? তোর সে বাপের দরিদ্রতা
জগৎবিখ্যাত, বল্‌ মা, সে যাবে কোথা?
তাই আমি ধরিয়াছি অলংকারসম
তোমার বাপের দৈন্য সর্ব অঙ্গে মম,
মা আমার।
মহিষী।              ওগো, আপন বাপের গর্বে
আমার বাপেরে দাও খোঁটা? তাই গর্ভে