প্রকৃতির প্রতিশোধ
পথিক।     পিতার কী নাম তব? কে তুমি বালিকা?
বালিকা।   পরিচয় না পেলে কি আসিবে না ঘরে?
তবে শুন পরিচয় — রঘু পিতা মম,
অনার্যা অশুচি আমি, বিশ্বের ঘৃণিত।
চমকিয়া
পথিক।     রঘুর দুহিতা তুমি? সুখে থাকো বাছা!
কাজ আছে অন্যত্তরে, ত্বরা যেতে হবে।
[প্রস্থান


একটা খাট মাথায় হাসিতে হাসিতে পথে এক দল লোকের প্রবেশ


সকলে মিলিয়া।    হরিবোল— হরিবোল!

প্রথম।   বেটা এখনো জাগল না রে।

দ্বিতীয়।   বিষম ভারী।

এক জন পথিক।   কে হে, কাকে নিয়ে যাও।

তৃতীয়।   বিন্দে তাঁতি মড়ার মতো ঘুমোচ্ছিল, বেটাকে খাটসুদ্ধ উঠিয়ে এনেছি।

সকলে।   হরিবোল— হরিবোল!

দ্বিতীয়।   আর ভাই বইতে পারি নে, একবার ঝাঁকা দাও, শালা জেগে উঠুক।

বিন্দে।   (সহসা জাগিয়া উঠিয়া) অ্যাঁ অ্যাঁ উঁ উঁ!

তৃতীয়।    ওরে, শব্দ করে কে রে।

বিন্দে।    ওগো, ওগো, এ কী! আমি কোথায় যাচ্ছি!

সকলে।    (খাট নামাইয়া) চুপ কর্ বেটা!

দ্বিতীয়।   শালা মরে গিয়েও কথা কয়!

চতুর্থ।   তুই যে মরেছিস রে! হাত-পাগুলো সিধে করে চিত হয়ে পড়ে থাক্‌।

বিন্দে।   আমি মরি নি, আমি ঘুমোচ্ছিলুম।

পঞ্চম।   মরেছিস তোর হুঁশ নেই, তুই তর্ক করতে বসলি! এমনি বেটার বুদ্ধি বটে!

ষষ্ঠ।    ওর কথা শোন কেন! বিপদে পড়ে এখন মিথ্যে কথা বলছে।

সপ্তম।    মিছে দেরি কর কেন? ও কি আর কবুল করবে? চলো ওকে পুড়িয়ে নিয়ে আসি গে।

বিন্দে।   দোহাই বাবা, আমি মরি নি। তোদের পায়ে পড়ি বাবা, আমি মরি নি।

প্রথম।   আচ্ছা, আগে প্রমাণ কর্ তুই মরিস নি।

বিন্দে।   হাঁ, আমি প্রমাণ করে দেব, আমার স্ত্রীর হাতে শাঁখা আছে দেখবে চলো।

দ্বিতীয়।    না, তা না, ওকে মার্, দেখি ওর লাগে কি না।