প্রকৃতির প্রতিশোধ
দূরেতে দাঁড়িয়ে আমি চেয়ে চেয়ে দেখি!
সন্ন্যাসী।     হায় হায়, ইহাদের বুঝাব কেমনে!
সুখ দুঃখ সে তো, বাছা জগতের পীড়া!
জগৎ জীবন্ত মৃত্যু — অনন্ত যন্ত্রণা!
মরণ মরিতে চায় মরিছে না তবু—
চিরদিন মৃত্যুরূপে রয়েছে বাঁচিয়া।
জগৎ মৃত্যুর নদী চিরকাল ধরে
পড়িছে সমুদ্রমাঝে, ফুরায় না তবু —
প্রতি ঢেউ, প্রতি তৃণ, প্রতি জলকণা
কিছুই থাকে না, তবু সে থাকে সমান!
বিশ্ব মহা মৃতদেহ, তারি কীট তোরা
মরণেরে খেয়ে খেয়ে রয়েছিস বেঁচে—
দু-দণ্ড ফুরায়ে যাবে কিলিবিলি করি,
আবার মৃতের মাঝে রহিবি মরিয়া।
বালিকা।    কী কথা বলিছ পিতা ভয় হয় শুনে।


পথে এক জন ভিক্ষুক পথিকের প্রবেশ


পথিক।    আশ্রয় কোথায় পাব? আশ্রয় কোথায়?
সন্ন্যাসী।    আশ্রয় কোথাও নাই — কে চাহে আশ্রয়?
আশ্রয় কেবল আছে আপনার মাঝে।
আমি ছাড়া যাহা-কিছু সকলি সংশয়।
আপনারে খুঁজে লও, ধরো তারে বুকে,
নহিলে ডুবিতে হবে সংশয়পাথারে।
পথিক।     আশ্রয় কে দেবে মোরে? আশ্রয় কোথায়?


বাহিরে আসিয়া


বালিকা।    আহা, কে গো, আসিবে কি এ মোর কুটিরে?
কাল প্রাতে চলে যেয়ো শ্রান্তি দূর করে।
একপাশে পর্ণশয্যা রেখেছি বিছায়ে,
এনে দেব ফলমূল নির্ঝরের জল।
পথিক।    কে তুমি গো?
বালিকা।            তোমাদেরি একজন আমি।