প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
“মা, তুমি আমাকে কী মনে কর ভেবে পাই নে। কাছে ঘেঁষতে যাব তোমার ঐ খুদে সার আইজাক নিউটনের, এমন রুচি আমার?— মরে গেলেও না।”
সংকোচ বোধ করলে রেবতী শরীরটাকে নিয়ে যেরকম আঁকুবাঁকু করে তারই নকল ক’রে নীলা বললে, “ঐ স্টাইলের পুরুষকে নিয়ে আমার চলবে না। যে-সব মেয়েরা ভালোবাসে বুড়ো খোকাদের মানুষ করতে, ওকে জিইয়ে রেখে দেওয়া ভালো তাদেরই জন্যে। ও মারবার যোগ্য শিকারই নয়।”
“একটু বেশি বাড়িয়ে কথা বলছিস নীলা, তাই ভয় হচ্ছে ওটা ঠিক তোর মনের কথা নয়। তা হোক, ওর সম্বন্ধে তোর মনের ভাব যাই হোক, ওকে যদি মাটি করতে চাস তা হলে সে তোর পক্ষে ভালো হবে না।”
“কখন তোমার কী মর্জি কিছুই বুঝতে পারি নে মা। ওর সঙ্গে আমার বিয়ে দেবার জন্যে তুমি আমাকে সাজিয়ে পুতুল গড়ে তুলেছিলে, সে কি আমি বুঝতে পারি নি। সেইজন্যেই কি তুমি আমাকে ওর বেশি কাছে আনাগোনা করতে বারণ করছ, পাছে, চেনাশোনার ঘেঁষ লেগে পালিশ নষ্ট হয়ে যায়।”
“দেখ্ নীলা, আমি তোকে ব’লে দিচ্ছি তোর সঙ্গে ওর বিয়ে কিছুতেই হতে পারবে না।”
“তা হলে আমি যদি মোতিগড়ের রাজকুমারকে বিয়ে করি? ”
“ইচ্ছা হয় তো করিস।”
“সুবিধে আছে, তার তিনটে বিয়ে, আমার দায় অনেকটা হালকা হবে, আর সে মদ খেয়ে ঢলাঢলি করে নাইটক্লাবে— তখন আমি অনেকটা ছুটি পাব।”
“আচ্ছা বেশ, সেই ভালো। রেবতীর সঙ্গে তোর বিয়ে হতে দেব না।”
“কেন, তোমার সার আইজাক নিউটনের বুদ্ধি আমি ঘুলিয়ে দেব মনে কর? ”
“সে তর্ক থাক্, যা বললুম তা মনে রাখিস।”
“উনি নিজেই যদি হ্যাংলাপনা করেন।”
“তা হলে এ পাড়া তাকে ছাড়তে হবে— তোর অন্নে তাকে মানুষ করিস, তোর বাপের তহবিল থেকে এক কড়িও সে পাবে না।”
“সর্বনাশ! তা হলে নমস্কার সার আইজাক নিউটন।”
সেদিনকার পালা সংক্ষেপে এই পর্যন্ত।