প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
নীলাকে দেখিয়ে সোহিনী বললে, “যিনি জোগাবেন তিনি যে ঐ বসে আছেন।”
“গয়লানীর ব্যাবসা ধরেছ নাকি, মা”
“গয়লা ধরার ব্যাবসা ধরেছে, ঐ যে বসে আছে শিকারটি।”
“কে, আমাদের রেবি নাকি।”
“এইবার আমার মেয়ে আমার ল্যাবরেটরিকে বাঁচিয়েছে। আমি লোক চিনতে পারি নি; কিন্তু আমার মেয়ে ঠিক বুঝেছিল যে ল্যাবরেটরিতে গোয়ালঘর বসিয়ে দিয়েছিলুম—গোবরের কুণ্ডে আর-একটু হলেই ডুবত সমস্ত জিনিসটা।”
অধ্যাপক বললেন, “মা, তুমি এই জীবটিকে আবিষ্কার করেছ যখন, তখন এই গোষ্ঠবিহারীর ভার তোমাকেই নিতে হবে। ওর আর সবই আছে কেবল বুদ্ধি নেই, তুমি কাছে থাকলে তার অভাবটা টের পাওয়া যাবে না। বোকা পুরুষদের নাকে দড়ি দিয়ে চালিয়ে নিয়ে বেড়ানো সহজ।”
নীলা বললে, “কী গো সার আইজাক নিউটন, রেজিস্ট্রি আপিসে নোটিস তো দেওয়া হয়েছে, ফিরিয়ে নিতে চাও নাকি।”
বুক ফুলিয়ে রেবতী বললে, “মরে গেলেও না।”
“বিয়টা হবে তা হলে অশুভ লগ্নে।”
“হবেই, নিশ্চয় হবে।”
সোহিনী বললে, “কিন্তু ল্যাবরেটরি থেকে শত হস্ত দূরে।”
অধ্যাপক বললেন, “মা নীলু, ও বোকা, কিন্তু অক্ষম নয়। ওর নেশাটা কেটে যাক, তার পরে ওর খোরাকের জন্যে বেশি ভাবতে হবে না।”
“সার আইজাক, তা হলে কিন্তু তোমার কাপড়চোপড়গুলো একটু ভদ্র রকমের বানাতে হবে, নইলে তোমার সামনে আমাকে আবার ঘোমটা ধরতে হবে।”
হঠাৎ আর-একটা ছায়া পড়ল দেয়ালে। পিসিমা এসে দাঁড়ালেন। বললেন, “রেবি, চলে আয়।”
সুড় সুড় করে রেবতী পিসিমার পিছন পিছন চলে গেল, একবার ফিরেও তাকাল না।
আশ্বিন ১৩৪৭