পিত্রার্কা ও লরা

ভাঙি দেয় যৌবনের সুখস্বপ্ন মোর!

কখনো বা সেই মনোহর শৈলের প্রতি নির্ঝর তটিনী বৃক্ষলতায়, তিনি তাঁহার বিষণ্ন-মর্মের নিরাশা সংগীত গাহিয়া গাহিয়া বেড়াইতেন–

বিমল বাহিনী ওগো তরুন-তটিনী।

উজ্জ্বল-তরঙ্গে তব, প্রেয়সী আমার-

ভক্ত হৃদয়ের মম একমাত্র দেবী

সৌন্দর্য তাঁহার যত করেছেন দান!

শুন গো পাদপ তুমি, তব দেহ-’পরে

ভর দিয়া দাঁড়াইয়া ছিলেন সে দেবী,

নত হয়ে পড়েছিল ফুল পত্রগুলি

বসনের তলে; বক্ষ সুবিমল তার

পরশিয়াছিলে তব সুধা আলিঙ্গনে।

তুমি বায়ু সেইখানে বহিতেছ সদা

যেইখানে প্রেম আসি দেখাইলা মোরে

প্রিয়ার নয়নে শোভে ভাণ্ডার তাহার!

শুন গো তোমরা সবে আর-একবার

এই ভগ্ন-হৃদয়ের শেষ দুঃখ-গান!

অবশ্য র্ফলিবে যদি ভাগ্যের লিখন!

অবশ্যই অবশেষে প্রেম যদি মোর

অশ্রুময় আঁখিদ্বয় করে গো মুদিত,

ভ্রমিবে যখন আত্মা স্বদেশ আকাশে

তখন দেখো গো যেন এই প্রিয়-স্থানে

অভাগার শেষ-চিহ্ন হয় গো নিহিত!

মরণের কঠোরতা হবে কত হ্রাস,

যদি এই প্রিয় আশা, সেই ভয়ানক

অনন্তের পথ করে পুষ্প-বিকীরিত!

এই কাননের মতো সুশীতল ছায়া

কোথা আছে পৃথিবীতে, শ্রান্ত আত্মা যেথা

এক মুহূর্তের তরে করিবে বিশ্রাম!

নাহিকো এমন শান্ত হরিত-কবর

যেখানে সংসার-শ্রমে পরিশ্রান্ত -দেহ