সন্ধ্যাসংগীত

এইরূপে প্রতি উষা যাইত কাটিয়া।

একদিন সে-বালিকা না আসিত যদি

হৃদয় কেমন যেন হইত বিকল —

প্রভাত কেমন যেন যেত না কাটিয়া —

দিন যেত অতি ধীরে নিরাশ-চরণে!

বর্ষচক্র আর বার আসিল ফিরিয়া,

নূতন বসন্তে পুনঃ হাসিল ধরণী,

প্রভাতে অলস ভাবে, বসি তরুতলে,

দামিনীরে শুধালেম কথায় কথায়

‘ দামিনী, তুমি কি মোরে ভালোবাস বালা? '

অলীক-শরম-রোষে ভ্রূকুটি করিয়া

ছুটে সে পলায়ে গেল দূর বনান্তরে —

জানি না কী ভাবি পুনঃ ছুটিয়া আসিয়া

‘ ভালোবাসি — ভালোবাসি — ’ কহিয়া অমনি

শরমে-মাখানো মুখ লুকালো এ বুকে।

এইরূপে দিন যেত স্বপ্ন-খেলা খেলি।

কত ক্ষুদ্র অভিমানে কাঁদিত বালিকা,

কত ক্ষুদ্র কথা লয়ে হাসিত হরষে —

কিন্তু জানিতাম কি রে এই ভালোবাসা

দুদিনের ছেলেখেলা, আর কিছু নয়?

কে জানিত প্রভাতের নবীন কিরণে

এমন শতেক ফুল উঠে রে ফুটিয়া

প্রভাতের বায়ু সনে খেলা সাঙ্গ হলে

আপনি শুকায়ে শেষে ঝরে পড়ে যায় —

ওই ফুলে থুয়েছিনু হৃদয়ের আশা,

ওই কুসুমের সাথে খসে পড়ে গেল!

আর কিছুকাল পরে এই দামিনীরে

যে কথা বলিয়াছিনু আজো মনে আছে।

‘ দামিনী, মনে কি পড়ে সে দিনের কথা?

বলো দেখি কত দিন ওই মুখখানি

দেখি নি তোমার? তাই দেখিতে এয়েছি!

জোছনার রাত্রে যবে বসেছি কাননে,