ঘরছাড়া

          তখন একটা রাত — উঠেছে সে তড়বড়ি,

কাঁচা ঘুম ভেঙে। শিয়রেতে ঘড়ি

                   কর্কশ সংকেত দিল নির্মম ধ্বনিতে।

                             অঘ্রানের শীতে

                       এ বাসার মেয়াদের শেষে

                   যেতে হবে আত্মীয়পরশহীন দেশে

                             ক্ষমাহীন কর্তব্যের ডাকে।

                                       পিছে পড়ে থাকে

                                এবারের মতো

                        ত্যাগযোগ্য গৃহসজ্জা যত।

              জরাগ্রস্ত তক্তপোশ কালিমাখা-শতরঞ্চ- পাতা ;

                            আরামকেদারা ভাঙা-হাতা ;

                                পাশের শোবার ঘরে

                             হেলে-পড়া টিপয়ের ‘ পরে

                       পুরোনো আয়না দাগ-ধরা ;

          পোকা কাটা হিসাবের খাতা-ভরা

                   কাঠের সিন্দুক এক ধারে ;

          দেয়ালে-ঠেসান-দেওয়া সারে সারে

                   বহু বৎসরের পাঁজি ;

          কুলুঙ্গিতে অনাদৃত পূজার ফুলের জীর্ণ সাজি।

                    প্রদীপের স্তিমিত শিখায়

                             দেখা যায়,

                   ছায়াতে জড়িত তারা

                             স্তম্ভিত রয়েছে অর্থহারা।

 

 

       ট্যাক্সি এল দ্বারে, দিল সাড়া

হুংকারপরুষরবে। নিদ্রায় গম্ভীর পাড়া

                    রহে উদাসীন।

          প্রহরীশালায় দূরে বাজে সাড়ে-তিন।