উৎসর্গ

                  ফেনিয়ে ওঠে নীল সাগরের ঢেউ,

মর্মরিত - তমাল - ছায়ে           ভিজে চিকুর শুকায় বায়ে —

                  তাদের চেনে, চেনে না বা কেউ।

 

শৈলতলে চরায় ধেনু,              রাখালশিশু বাজায় বেণু,

                  চূড়ায় তারা সোনার মালা পরে।

সোনার তুলি দিয়ে লিখা               চৈত্রমাসের মরীচিকা

                  কাঁদায় হিয়া অপূর্বধন - তরে।

গাছের পাতা যেমন কাঁপে          দখিনবায়ে মধুর তাপে

                  তেমনি মম কাঁপছে সারা প্রাণ।

কাঁপছে দেহে কাঁপছে মনে    হাওয়ার সাথে আলোর সনে,

                  মর্মরিয়া উঠছে কলতান।

কোন্‌ অতিথি এসেছে গো,     কারেও আমি চিনি নে গো

                  মোর দ্বারে কে করছে আনাগোনা।

ছায়ায় আজি তরুর মূলে          ঘাসের'পরে নদীর কূলে

                  ওগো তোরা শোনা আমায় শোনা —

দূর - আকাশের - ঘুম - পাড়ানি         মৌমাছিদের - মন - হারানি

                  জুঁই - ফোটানো ঘাস - দোলানো গান,

জলের - গায়ে - পুলক - দেওয়া    ফুলের - গন্ধ - কুড়িয়ে - নেওয়া

                  চোখের পাতে - ঘুম - বোলানো তান।

 

শুনাস নে গো ক্লান্ত বুকের     বেদনা যত সুখের দুখের —

                  প্রেমের কথা — আশার নিরাশার।

শুনাও শুধু মৃদুমন্দ                  অর্থবিহীন কথার ছন্দ,

                  শুধু সুরের আকুল ঝংকার।

ধারাযন্ত্রে সিনান করি                  যত্নে তুমি এসো পরি

                  চাঁপাবরন লঘু বসনখানি।

ভালে আঁকো ফুলের রেখা              চন্দনেরই পত্রলেখা,

                  কোলের'পরে সেতার লহো টানি।

দূর দিগন্তে মাঠের পারে          সুনীল - ছায়া গাছের সারে

                  নয়নদুটি মগ্ন করি চাও।

ভিন্নদেশী কবির গাঁথা           অজানা কোন্‌ ভাষার গাথা

                  গুঞ্জরিয়া গুঞ্জরিয়া গাও।