তুমি

       ওই ছাপাখানাটার ভূত,

আমার ভাগ্যবশে তুমি তারি দূত।

দশটা বাজল তবু আস নাই ;

দেহটা জড়িয়ে আছে আরামের বাসনাই ;

মাঝে থেকে আমি খেটে মরি যে —

পণ্য জুটেছে, খেয়াতরী যে

ঘাটে নাই।   কাব্যের দধিটা

বেশ করে জমে গেছে, নদীটা

এইবার পার ক ' রে প্রেসে লও।

খাতার পাতায় তারে ঠেসে লও।

কথাটা তো একটুও সোজা নয়,

স্টেশন-কুলির এ তো বোঝা নয়।

বচনের ভার ঘাড়ে ধরেছি,

চিরদিন তাই নিয়ে মরেছি ;

বয়স হয়েছে আশি, তবুও

সে ভার কি কমবে না কভুও।

আমার হতেছে মনে বিশ্বাস —

সকালে ভুলাল তব নিশ্বাস

রান্নাঘরের ভাজাভুজিতে,

সেখানে খোরাক ছিলে খুঁজিতে,

উতলা আছিল তব মনটা,

শুনতে পাও নি তাই ঘণ্টা।

 

শুঁটকিমাছের যারা রাঁধুনিক

হয়তো সে দলে তুমি আধুনিক।

তব নাসিকার গুণ কী যে তা,

বাসি দুর্গন্ধের বিজেতা।

সেটা প্রোলিটেরিটের লক্ষণ,

বুর্জোয়া-গর্বের মোক্ষণ।

রৌদ্র যেতেছে চড়ে আকাশে,

  কাঁচা ঘুম ভেঙে মুখ ফ্যাকাশে।