কড়ি ও কোমল

গায় না যে কেউ, আসল কথা নাইকো কারো সুর - বোধ!

কাগজওয়ালা সারি সারি নাড়ছে কাগজ হাতে নিয়ে —

বাঙলা থেকে শান্তি বিদায় তিনশো কুলোর বাতাস দিয়ে।

কাগজ দিয়ে নৌকা বানায় বেকার যত ছেলেপিলে,

কর্ণ ধরে পার করবেন দু - এক পয়সা খেয়া দিলে।

সস্তা শুনে ছুটে আসে যত দীর্ঘকর্ণগুলো —

বঙ্গদেশের চতুর্দিকে তাই উড়ছে এত ধুলো।

খুদে খুদে ‘আর্য' গুলো ঘাসের মতো গজিয়ে ওঠে,

ছুঁচোলো সব জিবের ডগা কাঁটার মতো পায়ে ফোটে।

তাঁরা বলেন, ‘‘ আমিই কল্কি'' — গাঁজার কল্কি হবে বুঝি!

অবতারে ভরে গেল যত রাজ্যের গলিঘুঁজি।

 

পাড়ার এমন কত আছে কত কব তার!

বঙ্গদেশে মেলাই এল বরা '- অবতার।

দাঁতের জোরে হিন্দুশাস্ত্র তুলবে তারা পাঁকের থেকে,

দাঁতকপাটি লাগে তাদের দাঁত - খিঁচুনির ভঙ্গি দেখে।

আগাগোড়াই মিথ্যে কথা, মিথ্যেবাদীর কোলাহল,

জিব নাচিয়ে বেড়ায় যত জিহ্বাওয়ালা সঙের দল।

বাক্যবন্যা ফেনিয়ে আসে, ভাসিয়ে নে যায় তোড়ে —

কোনোক্রমে রক্ষে পেলাম মা - গঙ্গারই ক্রোড়ে।

 

হেথায় কিবা শান্তি - ঢালা কুলুকুলু তান!

সাগর - পানে বহন করে গিরিরাজের গান।

ধীরি ধীরি বাতাসটি দেয় জলের গায়ে কাঁটা।

আকাশেতে আলো - আঁধার খেলে জোয়ারভাঁটা।

তীরে তীরে গাছের সারি পল্লবেরই ঢেউ।

সারা দিবস হেলে দোলে, দেখে না তো কেউ।

পূর্বতীরে তরুশিরে অরুণ হেসে চায় —

পশ্চিমেতে কুঞ্জমাঝে সন্ধ্যা নেমে যায়।

তীরে ওঠে শঙ্খধ্বনি, ধীরে আসে কানে,

সন্ধ্যাতারা চেয়ে থাকে ধরণীর পানে।

ঝাউবনের আড়ালেতে চাঁদ ওঠে ধীরে,