কল্পনা

          কলহ সংশয়—

সহে না সহে না আর জীবনেরে খণ্ড খণ্ড করি

          দণ্ডে দণ্ডে ক্ষয়।

 

যে পথে অনন্ত লোক চলিয়াছে ভীষণ নীরবে

          সে পথপ্রান্তের

এক পার্শ্বে রাখো মোরে, নিরখিব বিরাট স্বরূপ

          যুগযুগান্তের।

শ্যেনসম অকস্মাৎ ছিন্ন করি ঊর্ধ্বে লয়ে যাও

          পঙ্ককুণ্ড হতে,

মহান মৃত্যুর সাথে মুখামুখি করে দাও মোরে

          বজ্রের আলোতে।

 

তার পরে ফেলে দাও, চূর্ণ করো, যাহা ইচ্ছা তব—

          ভগ্ন করো পাখা।

যেখানে নিক্ষেপ কর হৃত পত্র, চ্যুত পুষ্পদল,

          ছিন্নভিন্ন শাখা,

ক্ষণিক খেলনা তব, দয়াহীন তব দস্যুতার

          লুণ্ঠনাবশেষ,

সেথা মোরে ফেলে দিয়ো অনন্ততমিস্র সেই

          বিস্মৃতির দেশ।

 

নবাঙ্কুর ইক্ষুবনে এখনো ঝরিছে বৃষ্টিধারা

          বিশ্রামবিহীন,

মেঘের অন্তর-পথে অন্ধকার হতে অন্ধকারে

          চলে গেল দিন।

শান্ত ঝড়ে, ঝিল্লিরবে, ধরণীর স্নিগ্ধ গন্ধোচ্ছ্বাসে,

          মুক্ত বাতায়নে

বৎসরের শেষ গান সাঙ্গ করি দিনু অঞ্জলিয়া

          নিশীথগগনে।