সোনার তরী

                  মিথ্যার বন্ধন,

পরশে    খসিয়া   পড়ে,    তার     পরে    দণ্ড-দুই

                 অরণ্যে ক্রন্দন —

তুমি    শুধু    চিরস্থায়ী ,   তুমি   শুধু   সীমাশূন্য

                 মহাপরিণাম,

যত   আশা   যত   প্রেম   তোমার   তিমিরে   লভে

                 অনন্ত বিশ্রাম —

তবে   মৃত্যু,   দূরে যাও, এখনি দিয়ো না   ভেঙে

                 এ খেলার পুরী ;

ক্ষণেক   বিলম্ব   করো,    আমার   দুদিন    হতে

                 করিয়ো না চুরি।

 

 

একদা    নামিবে    সন্ধ্যা ,   বাজিবে    আরতিশঙ্খ

               অদূর মন্দিরে,

বিহঙ্গ    নীরব     হবে,    উঠিবে    ঝিল্লির     ধ্বনি

               অরণ্য-গভীরে,

সমাপ্ত    হইবে     কর্ম,      সংসার-সংগ্রাম-শেষে

               জয়পরাজয়,  

আসিবে    তন্দ্রার    ঘোর    পান্থের    নয়ন ' -পরে

               ক্লান্ত অতিশয়,

দিনান্তের   শেষ   আলো   দিগন্তে   মিলায়ে   যাবে,

               ধরণী আঁধার —

সুদূরে     জ্বলিবে     শুধু     অনন্তের    যাত্রাপথে

               প্রদীপ তারার,

শিয়রে    শয়ন-শেষে    বসি      যারা    অনিমেষে

               তাহাদের চোখে

আসিবে    শ্রান্তির     ভার    নিদ্রাহীন    যামিনীতে

               স্তিমিত আলোকে —

 

একে   একে   চলে   যাবে   আপন   আলয়ে   সবে

               সখাতে সখীতে,