সোনার তরী
নিতান্তই সহজ সরল,
সহস্র বিস্মৃতিরাশি
প্রত্যহ যেতেছে ভাসি
তারি দু-চারিটি অশ্রুজল।
নাহি বর্ণনার
ছটা
ঘটনার ঘনঘটা,
নাহি তত্ত্ব নাহি উপদেশ।
অন্তরে অতৃপ্তি রবে
সাঙ্গ করি’ মনে
হবে
শেষ হয়ে হইল না শেষ।
জগতের শত শত
অসমাপ্ত কথা যত,
অকালের বিচ্ছিন্ন মুকুল,
অজ্ঞাত জীবনগুলা,
অখ্যাত কীর্তির
ধুলা,
কত ভাব, কত ভয় ভুল—
সংসারের দশদিশি
ঝরিতেছে অহর্নিশি
ঝরঝর বরষার মতো—
ক্ষণ-অশ্রু ক্ষণ-হাসি
পড়িতেছে রাশি রাশি
শব্দ তার শুনি অবিরত।
সেই-সব হেলাফেলা,
নিমেষের লীলাখেলা
চারি দিকে করি স্তূপাকার,
তাই দিয়ে করি সৃষ্টি
একটি বিস্মৃতিবৃষ্টি
জীবনের শ্রাবণনিশার।