পলাতকা

                   আজকালকার দিনে

               সংযমের ই কঠোর সাধন বিনে

               সমাজেতে রয় না কোনো বাঁধ,

     মেয়েরা তাই শিখছে কেবল বিবিয়ানার ছাঁদ। ”

 

 

          স্ত্রীর মরণের পরে যবে

সবেমাত্র এগারো মাস হবে,

                  গুজব গেল শোনা

     এই বাড়িতে ঘটক করে আনাগোনা।

     প্রথম শুনে মঞ্জুলিকার হয় নিকো বিশ্বাস,

তার পরে সব রকম দেখে ছাড়লে সে নিশ্বাস।

          ব্যস্ত সবাই, কেমনতরো ভাব

      আসছে ঘরে নানা রকম বিলিতি আসবাব।

     দেখলে বাপের নতুন করে সাজসজ্জা শুরু,

          হঠাৎ কালো ভ্রমরকৃষ্ণ ভুরু,

        পাকাচুল সব কখন হল কটা,

     চাদরেতে যখন-তখন গন্ধ মাখার ঘটা।

 

 

     মার কথা আজ মঞ্জুলিকার পড়ল মনে

          বুক - ভাঙা এক বিষম ব্যথার সনে।

                   হোক না মৃত্যু, তবু

এ-বাড়ির এই হাওয়ার সঙ্গে বিরহ তাঁর ঘটে নাই তো কভু।

          কল্যাণী সেই মূর্তিখানি সুধামাখা

          এ সংসারের মর্মে ছিল আঁকা ;

     সাধ্বীর সেই সাধনপুণ্য ছিল ঘরের মাঝে,

          তাঁরই পরশ ছিল সকল কাজে।

এ সংসারে তাঁর হবে আজ পরম মৃত্যু, বিষম অপমান —

          সেই ভেবে যে মঞ্জুলিকার ভেঙে পড়ল প্রাণ।