পলাতকা

                   অবাক কান্ড এ কী।

          এমন কথা মানুষ শুনেছে কি।

জাতে হয়তো মেথর হবে, কিংবা নেহাত ওঁচা,

          যাত্রীঘরের করে ঝাড়ামোছা,

                   পঁচিশ টাকা দিতেই হবে তাকে!

এমন হলে দেউলে হতে কদিন বাকি থাকে।

          “ আচ্ছা, আচ্ছা, হবে, হবে। আমি দেখছি মোট

                   একশো টাকার আছে একটা নোট,

          সেটা আবার ভাঙানো নেই! ”

 

                   বিনু বললে, “ এই

             ইস্টিশনেই ভাঙিয়ে নিলেই হবে। ”

                             “ আচ্ছা, দেব তবে ”

এই বলে সেই মেয়েটাকে আড়ালেতে নিয়ে গেলেম ডেকে,—

          আচ্ছা করেই দিলেম তারে হেঁকে —

     “ কেমন তোমার নোকরি থাকে দেখব আমি!

প্যাসেঞ্জারকে ঠকিয়ে বেড়াও! ঘোচাব নষ্টামি! ”

                   কেঁদে যখন পড়ল পায়ে ধরে

          দু-টাকা তার হাতে দিয়ে দিলেম বিদায় করে।

 

 

               জীবন-দেউল আঁধার করে নিবল হঠাৎ আলো।

                   ফিরে এলেম দু-মাস যেই ফুরাল।

                  বিলাসপুরে এবার যখন এলেম নামি,

                             একলা আমি।

                  শেষ নিমেষে নিয়ে আমার পায়ের ধূলি

                বিনু আমায় বলেছিল, “ এ জীবনের যা-কিছু আর ভুলি

                   শেষ দুটি মাস অনন্তকাল মাথায় রবে মম

                  বৈকুণ্ঠেতে নারায়ণীর সিঁথের ‘ পরে নিত্যসিঁদুর-সম।

                             এই দুটি মাস সুধায় দিলে ভরে

                  বিদায় নিলেম সেই কথাটি স্মরণ করে। ”