চিরদিনের দাগা

ওপার হতে এপার পানে খেয়া-নৌকো বেয়ে

                   ভাগ্য নেয়ে

          দলে দলে আনছে ছেলে মেয়ে।

                 সবাই সমান তারা

     এক সাজিতে ভরে-আনা চাঁপা ফুলের পারা।

                 তাহার পরে অন্ধকারে

           কোন্‌ ঘরে সে পৌঁছিয়ে দেয় কারে!

তখন তাদের আরম্ভ হয় নব নব কাহিনী-জাল বোনা —

                  দুঃখে সুখে দিনমুহূর্ত গোনা।

                   একে একে তিনটি মেয়ের পরে

          শৈল যখন জন্মাল তার বাপের ঘরে,

     জননী তার লজ্জা পেল ; ভাবল কোথা থেকে

          অবাঞ্ছিত কাঙালটারে আনল ঘরে ডেকে।

                  বৃষ্টিধারা চাইছে যখন চাষি

                 নামল যেন শিলাবৃষ্টিরাশি।

 

বিনা-দোষের অপরাধে শৈলবালার জীবন হল শুরু,

          পদে পদে অপরাধের বোঝা হল গুরু।

কারণ বিনা যে-অনাদর আপনি ওঠে জেগে

          বেড়েই চলে সে যে আপন বেগে।

মা তারে কয় ‘ পোড়ারমুখী ', শাসন করে বাপ —

                   এ কোন্‌ অভিশাপ

হতভাগী আনলি বয়ে — শুধু কেবল বেঁচে-থাকার পাপ।

          যতই তারা দিত ওরে গালি

নির্মলারে দেখত মলিন মাখিয়ে তারে আপন কথার কালি।

          নিজের মনের বিকারটিরেই শৈল ওরা কয়,

                   ওদের শৈল বিধির শৈল নয়।

 

          আমি বৃদ্ধ ছিনু ওদের প্রতিবেশী।

পাড়ায় কেবল আমার সঙ্গে দুষ্টু মেয়ের ছিল মেশামেশি।