ভর্ৎসনা

মিথ্যা আমায় কেন শরম দিলে

            চোখের চাওয়া নীরব তিরস্কারে!

আমি তোমার পাড়ার প্রান্ত দিয়ে

            চলেছিলেম আপন গৃহদ্বারে —

যেথা আমার বাঁধা ঘাটের কাছে

দুটি চাঁপায় ছায়া করে আছে,

জামের শাখা ফলে - আঁধার - করা

            স্বচ্ছগভীর পদ্মদিঘির ধারে।

তুমি আমায় কেন শরম দিলে

       চোখের চাওয়া নীরব তিরস্কারে!

 

আজ তো আমি মাটির পানে চেয়ে

            দীনবেশে যাই নি তোমার ঘরে।

অতিথ হয়ে দিই নি দ্বারে সাড়া,

            ভিক্ষাপাত্র নিই নি কাতর - করে।

আমি আমার পথে যেতে যেতে

তোমার ঘরের দ্বারের বাহিরেতে

ঘনশ্যামল তমাল - তরুমূলে

দাঁড়িয়েছি এই দণ্ড - দুয়ের তরে।

নতশিরে দুখানি হাত জুড়ি                  

            দীনবেশে যাই নি তোমার ঘরে।

 

আমি তোমার ফুল্ল পুষ্পবনে

            তুলি নাই তো যূথীর একটি দল।

আমি তোমার ফলের শাখা হতে

             ক্ষুধাভরে ছিঁড়ি নাই তো ফল।

আছি শুধু পথের প্রান্তদেশে

দাঁড়ায় যেথা সকল পান্থ এসে,

নিয়েছি এই শুধু গাছের ছায়া—

            পেয়েছি এই তরুণ তৃণতল।