ছন্দের মাত্রা

বহুকাল পূর্বে একটি গান রচনা করেছিলেম। ‘সবুজপত্রে’ সেটি উদ্‌ধৃত হয়েছিল।

আঁধার রজনী পোহালো,

জগৎ পুরিল পুলকে,

বিমল প্রভাতকিরণে

মিলিল দ্যুলোক ভূলোকে।

তাছাড়া এই ছন্দে পরবর্তী কালে দুই-একটি শ্লোক লিখেছিলুম। যথা–

গোড়াতেই ঢাক বাজনা,

কাজ করা তার কাজ না।

আর-একটি–

শকতিহীনের দাপনি

আপনারে মারে আপনি।

বলা বাহুল্য এগুলি ৯ মাত্রার চালে লেখা।

‘সবুজপত্রে’র প্রবন্ধে তার পরে দেখিয়েছিলুম ধ্বনিসংখ্যার কতরকম হেরফের করে এই ছন্দের বৈচিত্র্য ঘটতে পারে, অর্থাৎ তার চলন কত ভঙ্গির হয়। তাতে যে-দৃষ্টান্ত রচনা করেছিলেম তার পুনরুক্তি না করে নতুন বাণী প্রয়োগ করা যাক।

এইখানে বলে রাখা ভালো এই প্রবন্ধে ব্যবহৃত উদাহরণগুলিতে প্রত্যেক ভাগে তাল দিলে ছন্দের পার্থক্য ধরা সহজ হয়।

উপরের ছন্দে ৩+৩+৩এর লয়। নিচের ছন্দে ৩+২+৪এর লয়।

আসন | দিলে | অনাহূতে,

ভাষণ | দিলে | বীণাতানে,

বুঝি গো | তুমি | মেঘদূতে |

পাঠায়ে | ছিলে | মোর পানে।

বাদল রাতি এল যবে

বসিয়াছিনু একা একা,

গভীর গুরু গুরু রবে

কী ছবি মনে দিল দেখা।

পথের কথা পুবে হাওয়া

কহিল মোরে থেকে থেকে ;

উদাস হয়ে চলে যাওয়া,

খ্যাপামি সেই রোধিবে কে।

আমার তুমি অচেনা যে