কাহিনী

গৃহমাঝে — আনন্দের দিন নহে আজি।

স্বজনদুর্ভাগ্য লয়ে সর্ব অঙ্গে সাজি

গর্ব করিয়ো না মাতঃ! হয়ে সুসংযত

আজ হতে শুদ্ধচিত্তে উপবাসব্রত

করো আচরণ — বেণী করি উন্মোচন

শান্ত মনে করো, বৎ সে, দেবতা-অর্চন।

এ পাপসৌভাগ্যদিনে গর্ব-অহংকারে

প্রতিক্ষণে লজ্জা দিয়ো নাকো বিধাতারে।

খুলে ফেলো অলংকার, নব রক্তাম্বর ;

থামাও উৎসববাদ্য, রাজ-আড়ম্বর ;

অগ্নিগৃহে যাও, পুত্রী, ডাকো পুরোহিতে —

কালের প্রতীক্ষা করো শুদ্ধসত্ত্ব চিতে।

[ভানুমতীর প্রস্থান

দ্রৌপদীসহ পঞ্চপাণ্ডবের প্রবেশ

 

যুধিষ্ঠির।  আশীর্বাদ মাগিবারে এসেছি, জননী,

বিদায়ের কালে।

গান্ধারী।                        সৌভাগ্যের দিনমণি

দুঃখরাত্রি-অবসানে দ্বিগুণ উজ্জ্বল

উদিবে হে বৎসগণ! বায়ু হতে বল,

সূর্য হতে তেজ, পৃথ্বী হতে ধৈর্যক্ষমা

করো লাভ দুঃখব্রত পুত্র মোর! রমা

দৈন্য-মাঝে গুপ্ত থাকি দীন-ছদ্ম-রূপে

ফিরুন পশ্চাতে তব সদা চুপে চুপে,

দুঃখ হতে তোমা-তরে করুন সঞ্চয়

অক্ষয় সম্পদ। নিত্য হউক নির্ভয়

নির্বাসনবাস। বিনা পাপে দুঃখভোগ

অন্তরে জ্বলন্ত তেজ করুক সংযোগ

বহ্নিশিখাদগ্ধ দীপ্ত সুবর্ণের প্রায়।

সেই মহাদুঃখ হবে মহৎ সহায়

তোমাদের। সেই দুঃখে রহিবেন ঋণী

ধর্মরাজ বিধি, যবে শুধিবেন তিনি