রাজা ও রানী

নাম।

বিক্রমদেব।        কুমার?

     ইলা।                তারে জান তুমি! কেই বা

না জানে। সমস্ত কাশ্মীর তারে দিয়েছে

হৃদয়।

বিক্রমদেব।           কুমার? কাশ্মীরের যুবরাজ?

     ইলা। সেই বটে মহারাজ। তার নাম সদা

ধ্বনিছে চৌদিকে। তোমারি সে বন্ধু বুঝি!

মহৎ সে, ধরণীর যোগ্য অধিপতি।

বিক্রমদেব।  তাহার সৌভাগ্য-রবি গেছে অস্তাচলে,

ছাড়ো তার আশা। শিকারের মৃগসম

সে আজ তাড়িত, ভীত, আশ্রয়বিহীন,

গোপন অরণ্যছায়ে রয়েছে লুকায়ে।

কাশ্মীরের দীনতম ভিক্ষাজীবী আজ

সুখী তার চেয়ে।

     ইলা।             কী বলিলে মহারাজ?

বিক্রমদেব। তোমরা বসিয়া থাক ধরাপ্রান্তভাগে,

শুধু ভালোবাস। জান না বাহিরে বিশ্বে

গরজে সংসার, কর্মস্রোতে কে কোথায়

ভেসে যায়, ছলছল বিশাল নয়নে

তোমরা চাহিয়া থাক। বৃথা তার আশা।

     ইলা।  সত্য বলো মহারাজ, ছলনা করো না।

জেনো এই অতি ক্ষুদ্র রমণীর প্রাণ

শুধু আছে তারি তরে, তারি পথ চেয়ে।

কোন্‌ গৃহহীন পথে কোন্‌ বনমাঝে

কোথা ফিরে কুমার আমার? আমি যাব

বলে দাও — গৃহ ছেড়ে কখনো যাই নি,

কোথা যেতে হবে? কোন্‌ দিকে, কোন্‌ পাথে?

বিক্রমদেব।  বিদ্রোহী সে, রাজসৈন্য ফিরিতেছে সদা

সন্ধানে তাহার।

     ইলা।                  তোমরা কি বন্ধু নহ?

তোমরা কি রক্ষা করিবে না তারে?