বিসর্জন

গোবিন্দমাণিক্য।   দেবী-আজ্ঞা নিত্যকাল ধ্বনিছে জগতে।

সেই তো বধিরতম যেজন সে বাণী

শুনেও শুনে না।

রঘুপতি।     পাষণ্ড, নাস্তিক তুমি!

গোবিন্দমাণিক্য।   ঠাকুর, সময় নষ্ট হয়। যাও এবে

মন্দিরের কাজে। প্রচার করিয়া দিয়ো

পথে যেতে যেতে, আমার ত্রিপুররাজ্যে

যে করিবে জীবহত্যা জীবজননীর

পূজাচ্ছলে, তারে দিব নির্বাসনদণ্ড।

রঘুপতি।                     এই কি হইল স্থির?

গোবিন্দমাণিক্য।                     স্থির এই।


উঠিয়া

রঘুপতি।                       তবে

উচ্ছন্ন! উচ্ছন্ন যাও!

 

ছুটিয়া আসিয়া

 

চাঁদপাল।     হাঁ হাঁ! থামো! থামো!

গোবিন্দমাণিক্য।   বোসো চাঁদপাল। ঠাকুর, বলিয়া যাও।

মনোব্যথা লঘু করে যাও নিজ কাজে।

রঘুপতি।     তুমি কি ভেবেছ মনে ত্রিপুর-ঈশ্বরী

ত্রিপুরার প্রজা? প্রচারিবে তাঁর 'পরে

তোমার নিয়ম? হরণ করিবে তাঁর

বলি? হেন সাধ্য নাই তব। আমি আছি

মায়ের সেবক।

[ প্রস্থান

নয়নরায়।                         ক্ষমা করো অধীনের

স্পর্ধা মহারাজ। কোন্‌ অধিকারে, প্রভু,

জননীর বলি —

চাঁদপাল।     শান্ত হও সেনাপতি।