প্রায়শ্চিত্ত

রোদন

উদয়াদিত্য। মা মিথ্যা কেন কাঁদছ? যে মুক্তি পেয়েছে তার জন্যেও আবার কান্না। আমাকে আশীর্বাদ করে বিদায় করো।

মহিষী। রাজবাড়িতে জন্ম দিয়ে তোকে চিরদিন কেবল দুঃখ দিয়েছি— আমার ভাগ্য দিয়ে যখন তোর সুখ হল না তখন আমি আর তোকে কী বলে এখানে রাখব? ঈশ্বর তোকে যেখানে রাখেন সুখে রাখুন— কিন্তু বাবা, বিভার কী হবে।

উদয়াদিত্য। কী করে বলব মা! মহারাজের কাছে হুকুম নিয়েছি, ওকে শ্বশুরবাড়ি পৌঁছে দেব। সেখানে যদি সুখে থাকে তো ভালো— না যদি থাকে তবু ভালো— ভগবান যদি প্রসন্ন থাকেন ওর ভালো তো কেউ কেড়ে নেবে না।

বিভা। দাদা, দাদামহাশয় কেমন আছেন?

প্রতাপাদিত্যের পুনঃপ্রবেশ

প্রতাপাদিত্য। এস উদয়, কালীর মন্দিরে এস— মা'র পা ছুঁয়ে শপথ করবে এসো।

[ সকলের প্রস্থান


বাটীর বাহিরে
উদয়াদিত্য ও ধনঞ্জয়

ধনঞ্জয়। আজ রাস্তায় মিলন—আজ বড়ো আনন্দ। আজ আর ভণ্ডামির কোনো দরকার নেই—আজ যুবরাজ নয়। আজ তো তুমি ভাই! আয় ভাই কোলাকুলি করে নিই। (কোলাকুলি) দাদা, যেখানে দীনদরিদ্র সবাই এসে মেলে সেই দরাজ জায়গাটাতে এসে দাঁড়িয়েছ আজ আর কিছু ভাবনা নেই।

গান

সকল ভয়ের ভয় যে তারে

   কোন্‌ বিপদে কাড়াবে?

প্রাণের সঙ্গে যে প্রাণ গাঁথা

   কোন্‌ কালে সে ছাড়বে?

না হয় গেল সবই ভেসে-

রইবে তো সেই সর্বনেশে!

যে লাভ সকল ক্ষতির শেষে

সে লাভ কেবল বাড়বে।

সুখ নিয়ে ভাই ভয়ে থাকি,

আছে আছে দেয় সে ফাঁকি

দুঃখে যে সুখ থাকে বাকি

   কেই বা সে সুখ নাড়বে?