প্রায়শ্চিত্ত
প্রাসাদের দ্বারের বাহিরে
মাধবপুরের প্রজাদল

১। ( উচ্চস্বরে) আমরা এখানে হত্যা দিয়ে পড়ে থাকব।

২। আমরা এখানে না খেয়ে মরব।

প্রহরীর প্রবেশ

প্রহরী। এরা সব বৈরাগীঠাকুরের চেলা, এদের গায়ে হাত দিতে ভয় করে। কিন্তু যে-রকম গোলমাল লাগিয়েছে, এখনই মহারাজের কানে যাবে— মুশকিলে পড়ব। কী বাবা, তোমরা মিছে চেঁচামেচি করছ কেন বলো তো।

সকলে। আমরা রাজার কাছে দরবার করব।

প্রহরী। আমার পরামর্শ শোন্‌ বাবা— দরবার করতে গিয়ে মরবি। তোরা নেহাত ছোটো বলেই মহারাজ তোদের গায়ে হাত দেন নি— কিন্তু হাঙ্গামা যদি করিস তো একটি প্রাণীও রক্ষা পাবি নে।

১। আমরা আর তো কিছু চাই নে, যে-গারদে বাবা আছেন আমরাও সেখানে থাকতে চাই।

প্রহরী। ওরে চাই বললেই হবে এমন দেশ এ নয়।

২। আচ্ছা আমরা আমাদের যুবরাজকে দেখে যাব।

প্রহরী। তিনি তোদের ভয়েই লুকিয়ে বেড়াচ্ছেন।

৩। তাঁকে না দেখে আমরা যাব না।

সকলে। ( ঊর্ধ্বস্বরে) দোহাই যুবরাজ বাহাদুর।

উদয়াদিত্যের প্রবেশ

উদয়াদিত্য। আমি তোদের হুকুম করছি তোরা দেশে ফিরে যা।

১। তোমার হুকুম মানব— আমাদের ঠাকুরও হুকুম করেছেন তাঁর হুকুমও মানব— কিন্তু তোমাকে আমরা নিয়ে যাব।

উদয়াদিত্য। আমায় নিয়ে কী হবে?

১। তোমাকে আমাদের রাজা করব।

উদয়াদিত্য। তোদের তো বড়ো আস্পর্ধা হয়েছে! এমন কথা মুখে আনিস! তোদের কি মরবার জায়গা ছিল না?

২। মরতে হয় মরব, কিন্তু আমাদের আর দুঃখ সহ্য হয় না।

৩। আমাদের যে বুক কেমন করে ফাটছে তা বিধাতাপুরুষ জানেন।

৪। রাজা, তোমার দুঃখে আমাদের কলিজা জ্বলে গেল।

৫। আমাদের মা-লক্ষ্মী কোথায় গেল রাজা?

১। আমাদের দয়া করেছিল বলেই সে গেল।