প্রায়শ্চিত্ত
দ্বিতীয় অঙ্ক
চন্দ্রদ্বীপ। রাজা রামচন্দ্র রায়ের কক্ষ
রামচন্দ্র, রমাই ভাঁড়, ফর্নাণ্ডিজ ও মন্ত্রী

রামচন্দ্র। ( তামাকু টানিয়া) ওহে রমাই।

রমাই। আজ্ঞা মহারাজ!

রামচন্দ্র। হাঃ হাঃ হাঃ।

মন্ত্রী। হোঃ হোঃ হোঃ।

ফর্নাণ্ডিজ। ( হাততালি দিয়া) হিঃ হিঃ হিঃ — হিঃ হিঃ হিঃ।

রামচন্দ্র। খবর কী হে?

রমাই। পরম্পরায় শুনা গেল, সেনাপতি মশাইয়ের ঘরে চোর পড়েছিল।

রামচন্দ্র। ( চোখ টিপিয়া) তার পরে?

রমাই। নিবেদন করি মহারাজ। ( ফর্নাণ্ডিজ তাঁর কোর্তার বোতাম খুলছেন ও দিচ্ছেন) আজ দিন তিন-চার ধরে সেনাপতি মশাইয়ের ঘরে রাত্রে চোর আনাগোনা করছিল। সাহেবের ব্রাহ্মণী জানতে পেরে কর্তাকে অনেক ঠেলাঠেলি করেন, কিন্তু কোনোমতেই কর্তার ঘুম ভাঙাতে পারেন নি।

রামচন্দ্র। হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ।

মন্ত্রী। হোঃ হোঃ হোঃ হোঃ হোঃ।

সেনাপতি। হিঃ হিঃ হিঃ।

রমাই। তারপর দিনের বেলায় গৃহিণীর নিগ্রহ আর সইতে না পেরে জোড় হস্তে বললেন, “ দোহাই তোমার,

আজ রাত্রে চোর ধরব। ” রাত্রি দুই দণ্ডের সময় গিন্নী বললেন, “ ওগো চোর এসেছে। ” কর্তা বললেন, “ ওই যাঃ ঘরে যে আলো জ্বলছে! ” চোরকে ডেকে বললেন, “আজ তুই বড়ো বেঁচে গেলি। ঘরে আলো আছে, আজ নিরাপদে পালাতে পারবি, কাল আসিস দেখি — অন্ধকারে কেমন না ধরা পড়িস। ”

রামচন্দ্র। হা হা হা হা।

মন্ত্রী। হো হো হো হো হো।

সেনাপতি। হি।

রামচন্দ্র। তার পরে?

রমাই। জানি না, কী কারণে চোরের যথেষ্ট ভয় হল না তার পর রাত্রেও ঘরে এল। গিন্নী বললেন, “সর্বনাশ হল,ওঠো।” কর্তা বললেন, “ তুমি ওঠ না। ” গিন্নী বললেন, “ আমি উঠে কী করব?” কর্তা বললেন, “ কেন, ঘরে একটা আলো জ্বালাও না, কিছু যে দেখতে পাচ্ছি না। ” গিন্নী বিষম ক্রুদ্ধ ; কর্তা ততোধিক ক্রুদ্ধ হয়ে বললেন, “ দেখো দেখি। তোমার জন্যই তো যথাসর্বস্ব গেল। আলোটা জ্বালাও। বন্দুকটা আনো। ” ইতিমধ্যে চোর কাজকর্ম সেরে বললে, “ মশাই এক ছিলিম তামাক