প্রায়শ্চিত্ত

প্রতাপাদিত্য। ও নয়— সেই বৈরাগীটা।

১। আমাদের ঠাকুর! তিনি তো পূজোয় বসেছেন। এখনই আসবেন। ঐ যে এসেছেন।

 

ধনঞ্জয় বৈরাগীর প্রবেশ

ধনঞ্জয়। দয়া যখন হয় তখন সাধনা না করেই পাওয়া যায়। ভয় ছিল কাঙালদের দরজা থেকেই ফিরতে হয় বা। প্রভুর কৃপা হল, রাজাকে অমনি দেখতে পেলুম। ( উদয়াদিত্যের প্রতি) আর এই আমাদের হৃদয়ের রাজা। ওকে রাজা বলতে যাই বন্ধু বলে ফেলি!

উদয়াদিত্য। ধনঞ্জয়!

ধনঞ্জয়। কী রাজা! কী ভাই?

উদয়াদিত্য। এখানে কেন এলে?

ধনঞ্জয়। তোমাকে না দেখে থাকতে পারি নে যে।

উদয়াদিত্য। মহারাজ রাগ করছেন।

ধনঞ্জয়। রাগই সই। আগুন জ্বলছে তবু পতঙ্গ মরতে যায়।

প্রতাপাদিত্য। তুমি এই-সমস্ত প্রজাদের খেপিয়েছ?

ধনঞ্জয়। খেপাই বই কি! নিজে খেপি, ওদেরও খেপাই, এই তো আমার কাজ।

গান

আমারে      পাড়ায় পাড়ায় খেপিয়ে বেড়ায়

কোন্‌ খেপা সে।

ওরে     আকাশ জুড়ে মোহন সুরে

কী যে বাজে কোন্‌ বাতাসে।

ওরে খেপার দল গান ধর্ রে— হাঁ করে দাঁড়িয়ে রইলি কেন? রাজাকে পেয়েছিস আনন্দ করে নে। রাজা আমাদের মাধবপুরের নৃত্যটা দেখে নিক।

সকলে মিলিয়া নৃত্যগীত

 

গেল রে গেল বেলা, পাগলের কেমন খেলা-

ডেকে সে আকুল করে দেয় না ধরা।

তারে কানন-গিরি খুঁজে ফিরি,

কেঁদে মরি কোন্‌ হুতাশে!

(প্রতাপাদিত্যের মুখের দিকে চাহিয়া) আহা, আহা, রাজা আমার, অমন নিষ্ঠুর সেজে এ কী লীলা হচ্ছে! ধরা দেবে না বলে পণ করেছিলে আমরা ধরব বলে কোমর বেঁধে বেরিয়েছি।

প্রতাপাদিত্য। দেখো বৈরাগী, তুমি অমন পাগলামি করে আমাকে ভোলাতে পারবে না। এখন কাজের কথা হোক। মাধবপুরের প্রায় দু-বছরের খাজনা বাকি— দেবে কি না বলো।