প্রায়শ্চিত্ত

ওর      মনের বেদন থাকবে মনে

প্রাণের কথা ফুটবে না?

কঠিন পাষাণ বুকে লয়ে

নাই রহিল অটল হয়ে।

প্রেমেতে ঐ পাথর ক্ষ'য়ে

চোখের জল কি ছুটবে না?

আচ্ছা বিভা, তুই যদি পুরুষ হতিস তো কী করতিস? নিমন্ত্রণ-চিঠি না পেলে এক পা নড়তিস নে নাকি?

বিভা। আমার কথা ছেড়ে দাও — কিন্তু তাই বলে-

সুরমা। বিভা, শুনেছিস দাদামশায় এসে পৌঁছেছেন।

বিভা। এখানে এলেন কেন ভাই? আবার তো কিছু বিপদ ঘটবে না।

সুরমা। বিপদের মুখের উপর তেড়ে এলে বিপদ ছুটে পালায়।

বিভা। না ভাই, আমার বুকের ভিতর এখনও কেঁপে উঠছে। আমার এমন একটা ভয় ধরে গেছে কিছুতে ছাড়ছে না ; আমার মনে হচ্ছে কী যেন একটা হবে। মনে হচ্ছে যেন কাকে সাবধান করে দেবার আছে। আমার কিছুই ভালো লাগছে না। আচ্ছা, তিনি আমাদের দেখতে এখনও এলেন না কেন?

বসন্ত রায়ের প্রবেশ ও গান

 

আজ তোমারে দেখতে এলেম

অনেক দিনের পরে।

ভয় করো না সুখে থাকো,

বেশিক্ষণ থাকব নাকো,

এসেছি     দণ্ড দুয়ের তরে।

দেখব শুধু মুখখানি,

শোনাও যদি শুনব বাণী,

না-হয় যাব আড়াল থেকে

হাসি দেখে দেশান্তরে।


সুরমা। ( বিভার চিবুক ধরিয়া) দাদামশায়, বিভার হাসি দেখবার জন্যে তো আড়ালে যেতে হল না। এবার তবে দেশান্তরের উদ্‌‌‌‌‌‍যোগ করো।

বসন্ত রায়। না না, অত সহজে না। অমনি যে ফাঁকি দিয়ে হেসে তাড়াবে আমি তেমন পাত্র না। কেঁদে না তাড়ালে বুড়ো বিদায় হবে না। গোটা পনেরো নতুন গান আর একমাথা পুরানো পাকাচুল এনেছি সমস্ত নিকেশ না করে নড়ছি নে।

বিভা। মিছে বড়াই কর কেন? আধমাথা বই চুলই নেই!

বসন্ত রায়। ( মাথায় হাত বুলাইয়া) ওরে সে একদিন গেছে রে ভাই। বললে বিশ্বাস করবি নে, বসন্ত রায়েরও মাথায়