আশ্রমপীড়া
পঞ্চম দৃশ্য
নরোত্তম আহারে প্রবৃত্ত। গণেশের প্রবেশ

গণেশ। এত সকাল-সকাল আহারে বসেছেন যে!

নরোত্তম। সকাল আর কই? আপিসে বেরোতে হবে যে।

গণেশ। এখনি যেতে হবে! তবে যতক্ষণ খাচ্ছেন ততক্ষণ যদি আমার-

নরোত্তম। মশায়, আমার খাওয়া হয়েছে, আমি উঠলুম।

গণেশ। কিছুই যে খেলেন না, সবই যে পড়ে রইল। পান-তামাক তো খাবেন, ততক্ষণ যদি-

নরোত্তম। ( নেপথ্যে চাহিয়া) ঐ রে, নবকান্ত মুখ বিমর্ষ করে আসছে। আজ্ঞে না, পান-তামাকে প্রয়োজন নেই, আমি চললুম।

[ প্রস্থান

নবকান্তের প্রবেশ

নবকান্ত। নরোত্তম কোথায় মশায়?

গণেশ। ( খাতা বাহির করিয়া) তিনি চলে গেছেন। তা হোক-না, আপনি বসুন-না।

নবকান্ত। ( দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া) হায়, আমার কী অবস্থা হল!

গণেশ। কিছুই হয় নি, আপনি ভাববেন না, বেশ আছেন। হিন্দুপ্রকাশে আমার লেখা-

নবকান্ত। কিছুই নয়! বলেন কী! হৃদয়ের-

গনেশ। হৃদয়ের কথা তো হচ্ছিল না। আর্যমনীষিগণের-

নবকান্ত। আর্যমনীষী আবার কোত্থেকে এল! হৃদয়ের কথাই তো হচ্ছিল। আমি বলছিলুম, হৃদয় যখন-

গণেশ। আমি যা লিখেছি তার বিষয়টা হচ্ছে আর্যমনীষিগণ যে-সকল বিধান করে গেছেন আমাদের বর্তমান অবস্থায় তার কী করা উচিত।

নবকান্ত। শ্রাদ্ধ করা উচিত। সে যাক গে — যার হৃদয়ে তুষানল ধিকি ধিকি জ্বলছে-

গণেশ। যে যেন ভদ্রলোকের ঘরের চালের উপর গিয়ে না বসে, তা হলেই লঙ্কাকাণ্ড বাধবে। আমার প্রশ্ন এই, শাস্ত্রের মূলে কী আছে-

নবকান্ত। কচু।

গণেশ। এবং তার থেকে কী ফলছে?

নবকান্ত। কলা।

গণেশ। এবং সে মূল উদ্ধার কে করবে?

নবকান্ত। বরাহ অবতার।

গণেশ। সে ফল ভোগ করবে কে?

নবকান্ত। হনুমান অবতার। এখন আমর প্রশ্ন এই, জগতে সকলের চেয়ে গভীর রহস্য কী?

গণেশ। আর্যশাস্ত্র।