খ্যাতির বিড়ম্বনা

দ্বিতীয় ব্যক্তির প্রবেশ

দুকড়ি। কী চাই?

দ্বিতীয়। মহাশয়ের দেশবিখ্যাত বদান্যতা-

দুকড়ি। ও-সব হয়ে গেছে — হয়ে গেছে — নতুন কিছু থাকে তো বলুন।

দ্বিতীয়। আপনার দেশহিতৈষিতা-

দুকড়ি। আ মোলো — এও যে সেই কথাটাই বলে!

দ্বিতীয়। স্বদেশের সদনুষ্ঠানে আপনার সদনুরাগ-

দুকড়ি। এ তো বিষম দায় দেখি। আসল কথাটা খুলে বলুন।

দ্বিতীয়। একটা সভা-

দুকড়ি। আবার সভা!

দ্বিতীয়। এই দেখুন-না খাতা।

দুকড়ি। খাতা! কিসের খাতা!

দ্বিতীয়। চাঁদা আদায়-

দুকড়ি। চাঁদা! (হাত ধরিয়া টানিয়া ) ওঠো, ওঠো, বেরোও, বেরোও — প্রাণের মায়া থাকে তো-

[দ্বিরুক্তি না করিয়া চাঁদাওয়ালার প্রস্থান

তৃতীয় ব্যক্তির প্রবেশ

দুকড়ি। দেখো বাপু, আমার দেশহিতৈষিতা বদান্যতা বিনয় এ-সমস্ত শেষ হয়ে গেছে — তার পর থেকে আরম্ভ করো।

তৃতীয়। আপনার সার্বভৌমিকতা — সার্বজনীনতা — উদারতা-

দুকড়ি। তবু ভালো। এ কিছু নতুন ঠেকছে বটে। কিন্তু মশায়, ওগুলোও থাক্‌ — ভাষায় কথা আরম্ভ করুন।

তৃতীয়। আমাদের একটা লাইব্রেরি-

দুকড়ি। লাইব্রেরি? সভা নয় তো?

তৃতীয়। আজ্ঞে, সভা নয়।

দুকড়ি। আ, বাঁচা গেল। লাইব্রেরি। অতি উত্তম। তার পরে বলে যান।

তৃতীয়। এই দেখুন-না প্রস্পেক্টস-

দুকড়ি। খাতা নেই তো?

তৃতীয়। আজ্ঞে না — খাতা নয়, ছাপানো কাগজ।

দুকড়ি। আ! — তার পরে।

তৃতীয়। কিঞ্চিৎ চাঁদা।

দুকড়ি। ( লাফাইয়া) চাঁদা! ওরে, আমার বাড়ি আজ ডাকাত পড়েছে রে! পুলিসম্যান! পুলিসম্যান!

[ তৃতীয় ব্যক্তির ঊর্ধ্বশ্বাসে পলায়ন

হরশংকরবাবুর প্রবেশ

দুকড়ি। আরে, এসো এসো, হরশংকর এসো। সেই কালেজে একসঙ্গে পড়া — তার পরে তো আর দেখা হয় নি —