খ্যাতির বিড়ম্বনা

প্রথম। দেশের উন্নতি-উদ্দেশে হৃদয়ের-

দুকড়ি। আজ্ঞে, সে-সব কথা বলাই বাহুল্য-

প্রথম। তা ঠিক। মশায়ের মতো মহানুভব ব্যক্তি যাঁরা ভারতভূমির-

দুকড়ি। সমস্ত মানছি মশায়, অতএব ও অংশটুকুও ছেড়ে দিন। তার পরে-

প্রথম। বিনয়ী লোকের স্বভাবই এই যে, নিজের গুণানুবাদ-

দুকড়ি। রক্ষে করুন মশায়, আসল কথাটা বলুন।

প্রথম। আসল কথা কী জানেন — দিনে দিনে আমাদের দেশ অধোগতি প্রাপ্ত হচ্ছে-

দুকড়ি। সে কেবলমাত্র কথা সংক্ষেপ করতে না জানার দরুন।

প্রথম। আমাদের স্বর্ণশস্যশালিনী পুণ্যভূমি ভারতবর্ষ দারিদ্র্যের অন্ধকূপে-

দুকড়ি। ( সকাতরে মাথায় হাত দিয়া বসিয়া) বলে যান।

প্রথম। দারিদ্রের অন্ধকূপে দিনে দিনে নিমজ্জমানা-

দুকড়ি। ( কাতর স্বরে) মশায়, বুঝতে পারছি নে।

প্রথম। তবে আপনাকে প্রকৃত ব্যাপারটা বলি-

দুকড়ি। ( সানন্দে সাগ্রহে) সেই ভালো।

প্রথম। ইংরেজরা লুঠ করছে।

দুকড়ি। এ তো বেশ কথা। প্রমাণ সংগ্রহ করুন, ম্যাজিস্ট্রেটের কোর্টে নালিশ রুজু করি।

প্রথম। ম্যাজিস্ট্রেটও লুঠছে।

দুকড়ি। তবে ডিস্ট্রিক্ট্‌ জজের আদালত-

প্রথম। ডিস্ট্রিক্ট্‌ জজ তো ডাকাত।

দুকড়ি। ( অবাকভাবে) আপনার কথা আমি কিছু বুঝতে পারছি নে।

প্রথম। আমি বলছি, দেশের টাকা বিদেশে চালান যাচ্ছে।

দুকড়ি। দুঃখের বিষয়।

প্রথম। তাই একটা সভা-

দুকড়ি। ( সচকিত) সভা!

প্রথম। এই দেখুন-না খাতা।

দুকড়ি। ( বিস্ফারিতনেত্রে) খাতা!

প্রথম। কিঞ্চিৎ চাঁদা-

দুকড়ি। ( চৌকি হইতে লাফাইয়া উঠিয়া) চাঁদা! বেরোও — বেরোও — বেরোও-

তাড়াতাড়ি চৌকি-উল্‌টায়ন, কালী-ফেলন, প্রথম ব্যক্তির

বেগে প্রস্থানোদ্যম, পতন, উত্থান, গোলমাল