কাহিনী

সেই মোর রাজপ্রাপ্য — আমি চাহি জয়

দর্পিতের দর্প নাশি। শুন নিবেদন

পিতৃদেব — এতকাল তব সিংহাসন

আমার নিন্দুকদল নিত্য ছিল ঘিরে,

কণ্টকতরুর মতো নিষ্ঠুর প্রাচীরে

তোমার আমার মধ্যে রচি ব্যবধান —

শুনায়েছে পাণ্ডবের নিত্যগুণগান,

আমাদের নিত্য নিন্দা — এইমতে, পিতঃ,

পিতৃস্নেহ হতে মোরা চিরনির্বাসিত।

এইমতে, পিতঃ, মোরা শিশুকাল হতে

হীনবল — উৎসমুখে পিতৃস্নেহস্রোতে

পাষাণের বাধা পড়ি মোরা পরিক্ষীণ

শীর্ণ নদ, নষ্টপ্রাণ, গতিশক্তিহীন,

পদে পদে প্রতিহত ; পাণ্ডবেরা স্ফীত,

অখণ্ড, অবাধগতি। অদ্য হতে পিতঃ,

যদি সে নিন্দুকদলে নাহি কর দূর

সিংহাসনপার্শ্ব হতে, সঞ্জয় বিদুর

ভীষ্মপিতামহে, যদি তারা বিজ্ঞবেশে

হিতকথা ধর্মকথা সাধু-উপদেশে

নিন্দায় ধিক্কারে তর্কে নিমেষে নিমেষে

ছিন্ন ছিন্ন করি দেয় রাজকর্মডোর,

ভারাক্রান্ত করি রাখে রাজদণ্ড মোর,

পদে পদে দ্বিধা আনে রাজশক্তি-মাঝে,

মুকুট মলিন করে অপমানে লাজে,

তবে ক্ষমা দাও পিতৃদেব — নাহি কাজ

সিংহাসনকণ্টকশয়নে — মহারাজ,

বিনিময় করে লই পাণ্ডবের সনে

রাজ্য দিয়ে বনবাস, যাই নির্বাসনে।

ধৃতরাষ্ট্র।  হায় বৎস অভিমানী! পিতৃস্নেহ মোর

কিছু যদি হ্রাস হত শুনি সুকঠোর

সুহৃদের নিন্দাবাক্য, হইত কল্যাণ।

অধর্মে দিয়েছি যোগ, হারায়েছি জ্ঞান,