কাহিনী

দুর্যোধন।             নিন্দা! আর নাহি ডরি,

নিন্দারে করিব ধ্বংস কণ্ঠরুদ্ধ করি।

নিস্তব্ধ করিয়া দিব মুখরা নগরী

স্পর্ধিত রসনা তার দৃঢ়বলে চাপি

মোর পাদপীঠতলে। “ দুর্যোধন পাপী ”

“ দুর্যোধন ক্রূরমনা ” “ দুর্যোধন হীন ”

নিরুত্তরে শুনিয়া এসেছি এতদিন,

রাজদণ্ড স্পর্শ করি কহি মহারাজ,

আপামর জনে আমি কহাইব আজ —

“ দুর্যোধন রাজা, দুর্যোধন নাহি সহে

রাজনিন্দা-আলোচনা, দুর্যোধন বহে

নিজ হস্তে নিজ নাম। ”

ধৃতরাষ্ট্র।                      ওরে বৎস, শোন্‌,

নিন্দারে রসনা হতে দিলে নির্বাসন

নিম্নমুখে অন্তরের গূঢ় অন্ধকারে

গভীর জটিল মূল সুদূরে প্রসারে,

নিত্য বিষতিক্ত করি রাখে চিত্ততল।

রসনায় নৃত্য করি চপল চঞ্চল

নিন্দা শ্রান্ত হয়ে পড়ে ; দিয়ো না তাহারে

নিঃশব্দে আপন শক্তি বৃদ্ধি করিবারে

গোপন হৃদয়দুর্গে। প্রীতিমন্ত্রবলে

শান্ত করো, বন্দী করো নিন্দাসর্পদলে

বংশীরবে হাস্যমুখে।

দুর্যোধন।                      অব্যক্ত নিন্দায়

কোনো ক্ষতি নাহি করে রাজমর্যাদায় ;

ভ্রূক্ষেপ না করি তাহে। প্রীতি নাহি পাই

তাহে খেদ নাহি, কিন্তু স্পর্ধা নাহি চাই

মহারাজ! প্রীতিদান স্বেচ্ছার অধীন,

প্রীতিভিক্ষা দিয়ে থাকে দীনতম দীন —

সে প্রীতি বিলাক তারা পালিত মার্জারে,

দ্বারের কুক্কুরে, আর পাণ্ডবভ্রাতারে —

তাহে মোর নাহি কাজ। আমি চাহি ভয়,