বিসর্জন

হারু।    আমরা আছি খবর পেয়েছে, সৈন্যেরা শীঘ্র এ দিকে আসছে না।

কানু।    ঠাকুর, রানীমা পুজো পাঠিয়েছেন।

রঘুপতি।    জয়সিংহ, শীঘ্র পূজার আয়োজন করো।

[জয়সিংহের প্রস্থান

পুরবাসীগণের নৃত্যগীত। গোবিন্দমাণিক্যের প্রবেশ

 

গোবিন্দ।    চলে যাও হেথা হতে — নিয়ে যাও বলি।

রঘুপতি, শোন নাই আদেশ আমার?

রঘুপতি।    শুনি নাই।

গোবিন্দ।    তবে তুমি এ রাজ্যের নহ।

রঘুপতি।    নহি আমি। আমি আছি যেথা, সেখা এলে

রাজদণ্ড খসে যায় রাজহস্ত হতে,

মুকুট ধুলায় পড়ে লুটে। কে আছিস,

আন মা'র পূজা।

 

বাদ্যোদ্যম

 

গোবিন্দ।    চুপ কর্‌!

 

অনুচরের প্রতি

কোথা আছে

সেনাপতি, ডেকে আন্‌। হায় রঘুপতি,

অবশেষে সৈন্য দিয়ে ঘিরিতে হইল

ধর্ম! লজ্জা হয় ডাকিতে সৈনিকদল,

বাহুবল দুর্বলতা করায় স্মরণ।

রঘুপতি।    অবিশ্বাসী, সত্যই কি হয়েছে ধারণা

কলিযুগে ব্রহ্মতেজ গেছে — তাই এত

দুঃসাহস? যায় নাই। যে দীপ্ত অনল

জ্বলিছে অন্তরে, সে তোমার সিংহাসনে

নিশ্চয় লাগিবে। নতুবা এ মনানলে

ছাই করে পুড়াইব সব শাস্ত্র, সব

ব্রহ্মগর্ব, সমস্ত তেত্রিশ কোটি মিথ্যা।