বিসর্জন

নিষেধিল স্পর্ধাভারে।

জয়সিংহ।                গোবিন্দমাণিক্য!

রঘুপতি।    হাঁ গো, হাঁ, তোমার রাজা গোবিন্দমাণিক্য!

তোমার সকল-শ্রেষ্ঠ — তোমার প্রাণের

অধীশ্বর! অকৃতজ্ঞ! পালন করিনু

এত যত্নে স্নেহে তোরে শিশুকাল হতে,

আমা-চেয়ে প্রিয়তর আজ তোর কাছে

গোবিন্দমাণিক্য?

জয়সিংহ।    প্রভু, পিতৃকোলে বসি

আকাশে বাড়ায় হাত ক্ষুদ্র মুগ্ধ শিশু

পূর্ণচন্দ্র-পানে — দেব, তুমি পিতা মোর,

পূর্ণশশী মহারাজ গোবিন্দমাণিক্য।

কিন্তু এ কী বকিতেছি! কী কথা শুনিনু!

মায়ের পূজার বলি নিষেধ করেছে

রাজা? এ আদেশ কে মানিবে?

রঘুপতি।    না মানিলে

নির্বাসন।

জয়সিংহ।    মাতৃপূজাহীন রাজ্য হতে

নির্বাসন দণ্ড নহে। এ প্রাণ থাকিতে

অসম্পূর্ণ নাহি রবে জননীর পূজা।

যার 'পরে রয়েছে যে ভার, বল তার

আছে সে কাজের। করিবই মা'র পূজা

যদি সত্য মায়ের সেবক হই মোরা।

চলো প্রভু, বাজাই মায়ের ডঙ্কা, ডেকে

আনি পুরবাসীগণে, মন্দিরের দ্বার

খুলে দিই। — ওরে, আয় তোরা, আয়, আয়,

অভয়ার পূজা হবে — নির্ভয়ে আয় রে

তোরা মায়ের সন্তান! আয় পুরবাসী!

[জয়সিংহ ও রঘুপতির প্রস্থান

পুরবাসীগণের প্রবেশ

অক্রূর।    ওরে, আয় রে আয়!

সকলে।    জয় মা!