চিরকুমার-সভা

রসিক। পুলিসে খবর দে ভাই, চোর ধরা আমার ব্যাবসা নয়।

নীরবালা। কেন দিদি, তুমি আমার খাতা নিয়ে যেতে দিলে।

শৈলবালা। এমন অমূল্য ধন তুই ফেলে রেখে যাস কেন।

নীরবালা। আমি বুঝি ইচ্ছে করে ফেলে রেখে গেছি।

রসিক। লোকে সেইরকম সন্দেহ করছে।

নীরবালা। না রসিকদাদা, তোমার ও ঠাট্টা আমার ভালো লাগে না।

রসিক। তা হলে ভয়ানক খারাপ অবস্থা।

[ নীরবালার সক্রোধে প্রস্থান

সলজ্জ নৃপবালার প্রবেশ


রসিক। কী নৃপ, হারাধন খুঁজে বেড়াচ্ছিস?

নৃপবালা। না, আমার কিছু হারায় নি।

রসিক। সে তো অতি সুখের সংবাদ। শৈলদিদি, তা হলে আর কেন, রুমালখানার মালিক যখন পাওয়া যাচ্ছে না তখন যে লোক কুড়িয়ে পেয়েছে তাকেই ফিরিয়ে দিস। ( শৈলর হাত হইতে রুমাল লইয়া ) এ জিনিসটা কার ভাই।

নৃপবালা। ও আমার নয়।

পলায়নোদ্যত

রসিক। ( নৃপকে ধরিয়া ) যে জিনিসটা খোওয়া গেছে নৃপ তার উপরে কোনো দাবিও রাখতে চায় না।

নৃপবালা। রসিকদাদা, ছাড়ো, আমার কাজ আছে।


দ্বিতীয় দৃশ্য
গোলদিঘির পথ
শ্রীশ ও বিপিন

শ্রীশ। ওহে বিপিন, আজ মাঘের শেষে প্রথম বসন্তের বাতাস দিয়েছে, জ্যোৎস্নাও দিব্যি, আজ যদি এখনই ঘুমোতে কিংবা পড়া মুখস্থ করতে যাওয়া যায় তা হলে দেবতারা ধিক্‌কার দেবেন।

বিপিন। তাঁদের ধিক্‌কার খুব সহজে সহ্য হয়, কিন্তু ব্যামোর ধাক্কা কিংবা —

শ্রীশ। দেখো, ঐজন্যে তোমার সঙ্গে আমার ঝগড়া হয়। আমি বেশ জানি দক্ষিনে হাওয়ায় তোমারও প্রাণটা চঞ্চল হয়, কিন্তু পাছে কেউ তোমাকে কবিত্বের অপবাদ দেয় ব'লে মলয় - সমীরণটাকে একেবারেই আমল দিতে চাও না। এতে তোমার বাহাদুরিটা কী জিজ্ঞাসা করি। আমি তোমার কাছে আজ মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করছি, আমার ফুল ভালো লাগে, জ্যোৎস্না ভালো লাগে।

বিপিন। এবং —