পরিত্রাণ

বসন্ত। আহা, সার্থক হোক কান্না আমার।

ধনঞ্জয়।—               তোমার অভিসারে

যাব অগম পারে

   চলিতে পথে পথে বাজুক ব্যথা পায়ে।

বসন্ত। এই ব্যথার পথেই আমাকে চালাও প্রভু! আমি আর কিছুই চাই নে।

ধনঞ্জয়।—         পরানে বাজে বাঁশি, নয়নে বহে ধারা —

দুখের মাধুরীতে করিল দিশাহারা।

সকলি নিবে কেড়ে

দিবে না তবু ছেড়ে —

মন সরে না যেতে ফেলিলে এ কী দায়ে।


দ্বিতীয় দৃশ্য
মন্ত্রগৃহে প্রতাপাদিত্য ও মন্ত্রী

মন্ত্রী। মহারাজ, কাজটা কি ভালো হবে?

প্রতাপ। কোন্‌ কাজটা?

মন্ত্রী। যেটা আদেশ করেছেন —

প্রতাপ। কী আদেশ করেছি?

মন্ত্রী। আপনার পিতৃব্য সম্বন্ধে-

প্রতাপ। আমার পিতৃব্য সম্বন্ধে কী?

মন্ত্রী। মহারাজ আদেশ করেছিলেন, যখন রাজা বসন্তরায় যশোরে আসবার পথে শিমুলতলির চটিতে আশ্রয় নেবেন, তখন-

প্রতাপ। তখন কী? কথাটা শেষ করেই ফেলো।

মন্ত্রী। তখন দুজন পাঠান গিয়ে —

প্রতাপ। হাঁ।

মন্ত্রী। তাঁকে নিহত করবে।

প্রতাপ। নিহত করবে! অমরকোষ খুঁজে বুঝি আর কোনো কথা খুঁজে পেলে না? নিহত করবে! মেরে

ফেলবে কথাটা মুখে আনতে বুঝি বাধছে?

মন্ত্রী। মহারাজ আমার ভাবটি ভালো বুঝতে পারেন নি।

প্রতাপ। বিলক্ষণ বুঝতে পেরেছি।

মন্ত্রী। আজ্ঞে মহারাজ, আমি —

প্রতাপ। তুমি শিশু! খুন করাটা যেখানে ধর্ম সেখানে না-করাটাই পাপ, এটা এখনো তোমার শিখতে

বাকি আছে। পিতৃব্য বসন্তরায় নিজেকে ম্লেচ্ছের দাস বলে স্বীকার করেছেন। ক্ষত হলে নিজের বাহুকে কেটে ফেলা যায়,