শাপমোচন

আঁধার বিছায়ে আছি রাতের আকাশে

তোমারি আশ্বাসে,

তারায় তারায় জাগাও তোমার আলোক-ভরা বাণী

ওহে সুন্দর হে সুন্দর।

 

পাষাণ আমার কঠিন দুখে তোমায় কেঁদে বলে—

পরশ দিয়ে সরস করো, ভাসাও অশ্রুজলে

ওহে সুন্দর হে সুন্দর।

শুষ্ক যে এই নগ্ন মরু নিত্য মরে লাজে

আমার চিত্তমাঝে,

শ্যামল রসের আঁচল তাহার বক্ষে দেহো টানি॥

 

বধূ পতিগৃহে যাবার সময় সখীরা সুন্দরকে প্রণাম করে বললে—

রাঙিয়ে দিয়ে যাও গো এবার যাবার আগে।

আপন রাগে, গোপন রাগে,

তরুণ হাসির অরুণ রাগে,

অশ্রুজলের করুণ রাগে।

রঙ যেন মোর মর্মে লাগে— আমার সকল কর্মে লাগে—

সন্ধ্যাদীপের আগায় লাগে—

গভীর রাতের জাগায় লাগে।

 

যাবার আগে যাও গো আমায় জাগিয়ে দিয়ে,

রক্তে তোমার চরণদোলা লাগিয়ে দিয়ে।

আঁধার নিশার বক্ষে যেমন তারা জাগে,

পাষাণগুহার কক্ষে নিঝর-ধারা জাগে,

মেঘের বুকে যেমন মেঘের মন্দ্র জাগে,

বিশ্বনাচের কেন্দ্রে যেমন ছন্দ জাগে—

তেমনি আমায় দোল দিয়ে যাও যাবার পথে আগিয়ে দিয়ে

কাঁদন বাঁধন ভাগিয়ে দিয়ে॥

রাজবধূ এল পতিগৃহে।

দীপ জ্বলে না,ঘর থাকে অন্ধকার,সেই ঘরে প্রতি রাত্রে স্বামীর কাছে বধূ সমাগম।

কমলিকা বলে, “প্রভু,তোমাকে দেখবার জন্যে আমার দিন,আমার রাত্রি উৎসুক। আমাকে দেখা দাও।”