প্রকল্প সম্বন্ধেপ্রকল্প রূপায়ণেরবীন্দ্র-রচনাবলীজ্ঞাতব্য বিষয়পাঠকের চোখেআমাদের লিখুনডাউনলোডঅন্যান্য রচনা-সম্ভার |
যথালগ্নে রাজহস্তীর পৃষ্ঠে রত্নাসনে রাজার প্রতিনিধি হয়ে এল অরুণেশ্বরের বক্ষোবিহারিণী বীণা, রাজার অশ্রুত আহ্বান সঙ্গে করে। সখীরা দূরোদ্দিষ্ট বন্ধুর আবাহনগান গাইলে—
তোমার আনন্দ ওই এল দ্বারে এল গো
ওগো পুরবাসী।
বুকের আঁচলখানি ধুলায় ফেলে
আঙিনাতে মেলো গো।
পথে সেচন করো গন্ধবারি,
মলিন না হয় চরণ তারি,
তোমার সুন্দর ওই এল দ্বারে এল গো—
আকুল হৃদয়খানি সম্মুখে তার ছড়িয়ে ফেলো গো।
সকল ধন্য যে ধন্য হল হল গো,
বিশ্বজনের কল্যাণে আজ ঘরের দুয়ার খোলো গো।
হেরো রাঙা হল সকল গগন,
চিত্ত হল পুলকমগন,
তোমার নিত্য-আলো এল দ্বারে এল গো—
তোমার পরানপ্রদীপ তুলে ধরে ওই আলোতে জ্বেলো গো॥
অন্তঃপুরিকারা বীণাখানিকে বরণ করে নিয়ে এল বিবাহের আসরে, বধূকে আহ্বান করে গাইলে—
বাজো রে বাঁশরি বাজো
সুন্দরী, চন্দনমাল্যে মঙ্গলসন্ধ্যায় সাজো।
বুঝি মধুফাল্গুনমাসে চঞ্চল পান্থ সে আসে,
মধুকরপদভরকম্পিত চম্পক
অঙ্গনে ফোটে নি কি আজো।
রক্তিম অংশুক মাথে, কিংশুককঙ্কণ হাতে,
মঞ্জীরঝংকৃত পায়ে, সৌরভমন্থর বায়ে,
বন্দনসংগীতগুঞ্জনমুখরিত
নন্দনকুঞ্জে বিরাজো॥
বীণার সঙ্গে রাজকুমারীর মালা বদল হল। সখীরা এই বীণা সুন্দরকে উৎসর্গ করে গাইলে—
লহো লহো তুলে লহো নীরব বীণাখানি,
নন্দননিকুঞ্জ হতে সুর দেহো তায় আনি
ওহে সুন্দর হে সুন্দর।