যোগাযোগ

কুমুদিনী। কোনো কালেই যাব না সে কথা ভাবা শক্ত, যাবই সে কথাও সহজ নয়।

মোতির মা। আচ্ছা, তোমার দাদার কাছে একবার কথা বলে দেখব। দেখি তিনি কী বলেন। তাঁর দর্শন পাওয়া যাবে তো?

কুমুদিনী। তিনি এলেন বলে।

বিপ্রদাসের প্রবেশ

 

মোতির মা প্রণাম করে পায়ের ধুলো নিয়ে মেজের উপর বসল।

ব্যস্ত হয়ে

 

বিপ্রদাস। উঠে বোসো। এইখানে।

মোতির মা। না, এখানে বেশ আছি।

কুমুদিনী। দাদা, ইনি বিশেষ করে এসেছেন তোমার মত জিজ্ঞাসা করতে।

মোতির মা। না না, মত জিজ্ঞাসা পরের কথা, আমি এসেছি ওঁর চরণ দর্শন করতে।

কুমুদিনী। উনি জানতে চান, ওঁদের বাড়িতে আমাকে যেতে হবে কি না।

বিপ্রদাস। সে তো পরের বাড়ি, সেখানে কুমু গিয়ে থাকবে কী করে?

 

মোতির মা ফিস ফিস করে কী বলল। তার অভিপ্রায় ছিল, পাশে বসে

কুমুদিনী তার কথাগুলো বিপ্রদাসের কানে পৌঁছিয়ে দেবে।

সম্মত না হয়ে

 

কুমুদিনী। তুমিই গলা ছেড়ে বলো।

 

আর-একটু স্পষ্ট করে

 

 

মোতির মা। যা ওঁর আপনারই, কেউ তাকে পরের করে দিতে পারে না, তা সে যেই হোক-না।

বিপ্রদাস। সে কথা ঠিক নয়। উনি আশ্রিত মাত্র। ওঁর নিজের অধিকারের জোর নেই। ওঁকে ঘরছাড়া করলে হয়তো নিন্দা করবে, বাধা দেবে না। যত শাস্তি সমস্তই কেবল ওঁর জন্যে। তবু অনুগ্রহের আশ্রয়ও সহ্য করা যেত যদি তা মহদাশ্রয় হত।

 

কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে

 

মোতির মা। কিন্তু আপন সংসার না থাকলে মেয়েরা যে বাঁচে না। পুরুষেরা ভেসে বেড়াতে পারে, মেয়েদের কোথাও স্থিতি চাই তো।