বাঁশরি

বাঁশরি। আছ রাজি? বুঝেসুঝে বলছ? এ কমিক নভেল নয়, ভুল করলে প্রুফ-দেখা চলবে না, এডিশনও ফুরবে না মরার দিন পর্যন্ত।

ক্ষিতিশ। শিশু নই, এ কথা বুঝি।

বাঁশরি। না মশায়, কিচ্ছু বোঝ না, বুঝতে হবে দিনে দিনে পলে পলে, বুঝতে হবে হাড়ে হাড়ে মজ্জায় মজ্জায়।

ক্ষিতিশ। সেই হবে আমার জীবনের সবচেয়ে বড়ো অভিজ্ঞতা।

বাঁশরি। তবে বলি শোনো। অবোধের ‘পরে মেয়েদের স্বাভাবিক স্নেহ। তোমার উপর কৃপা আছে আমার। তাই অবুঝের মতো নিজের সর্বনাশের যে-প্রস্তাবটা করলে তাতে সম্মতি দিতে দয়া হচ্ছে।

ক্ষিতিশ। সম্মতি না দিলে সাংঘাতিক নির্দয়তা হবে। সামলে উঠতে পারব না।

বাঁশরি। মেলোড্রামা?

ক্ষিতিশ। না মেলোড্রামা নয়।

বাঁশরি। ক্রমে মেলোড্রামা হয়ে উঠবে না?

ক্ষিতিশ। যদি হয় তবে সেই দিনগুলোকে ঐ খাতার পাতার মতো টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে ফেলো।

বাঁশরি। (উঠে দাঁড়িয়ে) আচ্ছা সম্মতি দিলেম। (ক্ষিতিশ ছুটে এল বাঁশরির দিকে) ঐ রে, শুরু হল! ভালো করে ভেবে দেখো, এখনো পিছোবার সময় আছে।

ক্ষিতিশ। (করজোড়ে) মাপ করো, ভয় হচ্ছে পাছে মত বদলায়।

বাঁশরি। যখন বদলাবে তখন ভয় কোরো। অমন মুখের দিকে তাকিয়ে থেকো না। দেখতে খারাপ লাগে। যাও রেজেস্ট্রি আফিসে। তিন-চার দিনের মধ্যে বিয়ে হওয়া চাই।

ক্ষিতিশ। নোটিশের মেয়াদ কমাতে আইনে যদি বাধে।

বাঁশরি। তা হলে বিয়েতেও বাধবে। দেরি করতে সাহস নেই।

ক্ষিতিশ। অনুষ্ঠান?

বাঁশরি। হবে না অনুষ্ঠান, তোমার দেখছি কমিকের দিকে ঝোঁক আছে। এখনো বুঝলে না জিনিসটা সীরিয়াস।

ক্ষিতিশ। কাউকে নিমন্ত্রণ?

বাঁশরি। কাউকে না।

ক্ষিতিশ। কাউকেই না?

বাঁশরি। আচ্ছা, সোমশংকরকে।

ক্ষিতিশ। কিরকম চিঠিটা লিখতে হবে তার একটা খসড়া—

বাঁশরি। খসড়া কেন, লিখে দিচ্ছি।

ক্ষিতিশ। স্বহস্তে?

বাঁশরি। হাঁ, স্বহস্তে।

ক্ষিতিশ। আজই?

বাঁশরি। হাঁ, এখনই। (চিঠি লিখে) এই নাও, পড়ো।

ক্ষিতীশের পাঠ। এতদ্বারা সংবাদ দেওয়া যাইতেছে, শ্রীমতী বাঁশরি সরকারের সহিত শ্রীযুক্ত ক্ষিতিশচন্দ্র ভৌমিকের অবিলম্বে