শ্রাবণগাথা
জাত আছে। মুখের তর্ক ছেড়ে সুরের ব্যাখ্যা ধরা যাক। পুরবিকা, ধরো গান।
মেঘের    কোলে কোলে যায় রে চলে বকের পাঁতি;
ওরা    ঘরছাড়া মোর মনের কথা যায় বুঝি ওই গাঁথি গাঁথি।
                  সুদূরের    বাঁশির স্বরে
                  কে ওদের    হৃদয় হরে,
                  দুরাশার দুঃসাহসে উদাস করে;
         উধাও হাওয়ার পাগলামিতে পাখা ওদের ওঠে মাতি।
ওদের    ঘুম ছুটেছে, ভয় টুটেছে একেবারে;
         অলক্ষেতে লক্ষ্য ওদের, পিছন পানে তাকায় না রে।
                  যে বাসা     ছিল জানা,
                  সে ওদের    দিল হানা,
                  না জানার   পথে ওদের নাই রে মানা;
ওরা   দিনের শেষে দেখেছে কোন্‌ মনোহরণ আঁধার রাতি॥

নটরাজ। আপনার ঐ সভাকবির মুখখানা কিছুক্ষণ বন্ধ রাখুন। ওঁর গোমুখীবিনিঃসৃত বাক্যনির্ঝর এ দেশের কঠোর শিলাখণ্ডের উপর পাক খেয়ে বেড়াক। আমরা এনেছি সুরলোকের ধারা— আলোকের সভাপ্রাঙ্গণ ধুয়ে দিতে হবে। কাজ শেষ হলেই বিদায় নেব।

রাজা। আচ্ছা নটরাজ, তোমার পথের উপদ্রবকে নিরস্ত রাখব। পাল তুলে চলে যাও।

নটরাজ। মঞ্জুলা, তা হলে হাওয়াটা শোধন করে নিয়ে আর-একবার আবাহন গান ধরো।

তৃষ্ণার শান্তি,

সুন্দরকান্তি,

তুমি এলে নিখিলের সন্তাপভঞ্জন।

আঁকো ধরাবক্ষে

দিক্‌বধূচক্ষে

সুশীতল সুকোমল শ্যামরসরঞ্জন।

এলে বীর, ছন্দে—

তব কটিবন্ধে

বিদ্যুৎ-অসিলতা বেজে ওঠে ঝঞ্ঝন।

তব উত্তরীয়ে

ছায়া দিলে ভরিয়ে

তমালবনশিখরে নবনীল-অঞ্জন।

ঝিল্লির মন্দ্রে

মালতীর গন্ধে